সমীরণ পাল, হাবড়া(উত্তর ২৪ পরগনা) : উত্তর ২৪ পরগনায় ফের প্রকাশ্যে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব। দলের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন হাবড়া ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। ভাইরাল হল সেই ভিডিও। পাল্টা ফেসবুক পোস্টে নাম না করে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকেই নিশানা করলেন পঞ্চায়েত সদস্য। ঘটনা ঘিরে শুরু রাজনৈতিক তরজা।


সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে(ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ)। যাতে একজনকে বলতে শোনা যাচ্ছে, কেউ কেউ ভাবছেন আমি তলে-তলে সভাপতি হয়ে গেছি। আমি প্রধান আছি প্রধানই থাকব। না তা যদি মনে করেন, অনাস্থা দিয়ে পঞ্চায়েতটা ফেলে দেব, ঠেকাবার ক্ষমতা থাকবে না। ঠেকাবার ক্ষমতা থাকবে না। ভাইরাল এই ভিডিও ঘিরে উত্তর ২৪ পরগনায় ফের প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব।


এই বক্তব্য যাঁর মুখে শোনা যাচ্ছে, তিনি হাবড়া ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অজিত সাহা। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ২৮ অগাস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন তিনি। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, দলের ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতিকে হাতিয়ার করে দলের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। নাম না করে দিচ্ছেন অনাস্থার হুঁশিয়ারিও।


ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরেই সমালোচনায় সরব হয়েছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিতর্কিত মন্তব্যের বিরোধিতা করে ফেসবুক পোস্টে তাঁকে পাল্টা নিশানা করেছেন এলাকার তৃণমূল নেতা ও ওই পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য জাকির হোসেন। 


তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক ধীমান রায় বলেন, কোনও ক্ষোভ থাকলে দলের মধ্যে বলা উচিত। 


ঘটনা নিয়ে দলের অভ্যন্তরে জলঘোলা শুরু হওয়ার পরেই সুর বদল করেছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। এবিষয়ে অজিত সাহা বলেন, আমার মন্তব্যকে বিকৃত করা হয়েছে। আমি যেমন একাধিক পদে ছিলাম। এই নিয়ম চালু হওয়াতেই পদত্যাগ করেছি। অনাস্থা আনার কথা আমি বলিনি। অন্যরাও যাঁরা জেলা পরিষদ বা পঞ্চায়েতে পদে আছেন, তাঁরাও যাতে এই নীতি মানেন সেটাই বলতে চেয়েছি।


বারাসাত সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন, আমি অজিত সাহার সঙ্গে কথা বলব। না জেনে কোনও মন্তব্য করব না।


এদিকে তৃণমূলের অন্তর্কলহ সামনে আসতেই কটাক্ষের সুর শোনা গেছে গেরুয়া শিবিরে। বিজেপির বারাসাত সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক শেখর চট্টোপাধ্যায় বলেন, তৃণমূলের মধ্যে কোনও শৃঙ্খলা নেই। পদ চলে গেলেই একে অপরের বিরুদ্ধে বলে। এতে পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির সুবিধা হবে।


এখন দেখার, দলের অভ্যন্তরের এই দ্বন্দ্ব মেটাতে কী পদক্ষেপ করে উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল নেতৃত্ব।