সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: করোনা আবহে লাগাতার বিধিনিষেধের ঘেরাটোপে দূরে কোথাও বেড়াতে যাওয়া এখনো ভ্রমণ পিপাসু বাঙালির কাছে অধরা। তাই তাঁরা খুঁজে পেতে চাইছে ঘরের কাছে কোনও পর্যটন কেন্দ্র যেখানে সুরক্ষার সঙ্গে মিলবে সংক্রমণ ঠেকাতে যাবতীয় পরিছন্নতা। তেমনই এক উইকেন্ড ডেস্টিনেশন হয়ে উঠতে চলেছে উত্তর ২৪ পরগনার পাঁচপোতা বাওর। গাইঘাটায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এই প্রান্তের মনোরম জলরাশি দেখতে ইতিমধ্যেই দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন ভিড় করতে শুরু করেছেন। সাড়ে সাত কিলোমিটার লম্বা বিল ও চারপাশের প্রান্তর দেখে মনে হবে যেন এক টুকরো কেরালা।


একধারে সুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁচপোতা, অন্যপারে বেরি গোপাল পুর। এখানকার গ্রামবাসীরা সমবায় সমিতি তৈরি করে বাওড় এ মৎস্য চাষ করেন। আগে বিক্ষিপ্তভাবে পর্যটকরা আসতেন এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে। করোনা আবহে এই ধরনের ভ্রমণ পিপাসু মানুষ ঘরের কাছে খুঁজে পেতে চাইছেন আরশিনগর। বর্তমানে পর্যটকরা এইখানে এসে সারাদিন ঘোরাঘুরি দিনের শেষে বাড়ি ফিরে যান। সপ্তাহান্তে এখানে বেড়াতে এসে পর্যটকরা যাতে থেকেও যেতে পারেন দিন দুয়েক, তার জন্য ইতিমধ্যেই বিস্তীর্ণ জলরাশির ধরে শুরু হয়ে গিয়েছে ছোট ছোট একুশটি কটেজ তৈরির কাজ। রয়েছে নৌকা বিহারের ব্যবস্থা,  পাশাপাশি রয়েছে একটি স্পিড বোটও। কটেজগুলো তৈরি হয়ে গেলে থাকবে হোম স্টের ব্যবস্থা। নৌকা করে পর্যটকরা পৌঁছে যেতে পারেন ইছামতী নদীর তীর পর্যন্ত ।


শ্রীনাথপুর এর কাছে এই বিলটি মিশেছে ইছামতীর সঙ্গে। খুব দ্রুত এই এলাকাটিতে ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার তৈরি করা হচ্ছে। পাঁচপোতায় কটেজ ও হোমস্টে জ্বালা তৈরি করছেন, তাদের মতে, এলাকাটিতে ইকোট্যুরিজম সেন্টার গড়ে তোলার জন্য ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক উদ্যোগ শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে চালু হয়ে যাবে এই কটেজ গুলি। কম টাকায় এখানে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান সব দিক খতিয়ে দেখে এখানে ইকোট্যুরিজম সেন্টার গড়ে তোলার কাজ দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। সব মিলিয়ে পুজোর ছুটিতে একদিন অনায়াসে কাটানো যায় এই পাঁচপোতা বাওরে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সদর বারাসত থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে এই পর্যটন কেন্দ্রটি দ্রুত মানুষের নজর কাড়ছে।