উত্তর ২৪ পরগনা: বারাসাতের দেবীপুরেও একটি ইনস্টিটিউট চালাতেন মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya) ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল (Tapas Mandal)। সেখানেও হানা দেয় ইডি (ED)। মহিষবাথানে শাটারের তালা ভেঙে ও বারাসাতে দরজা বন্ধ থাকায় কার্যত পাঁচিল টপকে ঢোকেন ইডি-র অফিসাররা। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ঘিরে চলে তল্লাশি।


প্রসঙ্গত, ১০ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর  গভীর রাতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করে ইডি। ইডি সূত্রে বলা হয়েছে, বয়ানে অসঙ্গতি ও তদন্তে সহযোগিতা না করার অভিযোগ মানিকের বিরুদ্ধে। ইডি সূত্রের খবর, তারপর মানিক ভট্টাচার্যকে সিজিও কমপ্লেক্সের সাততলায় ইডি-র অফিসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ইডির তরফে দাবি করা হয়, তথ্যপ্রমাণ দেখানোর পরেও তিনি বিভ্রান্ত করছিলেন। তথ্য গোপন করার চেষ্টা করছিলেন। তার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সূত্রের খবর,   মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতারির পর তাঁর ছেলেকে ফোন করা হয়।  মানিক ভট্টাচার্যের আইনজীবীদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের রক্ষাকবচ আছে। তা সত্ত্বেও কীভাবে তাঁকে গ্রেফতার করা হল ? যদিও ইডি-র অফিসারদের যুক্তি, সুপ্রিম কোর্টের রক্ষাকবচ শুধুমাত্র সিবিআইয়ের মামলায় রয়েছে। তাই ইডি-র তরফ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যেহেতু রক্ষাকবচ শুধুমাত্র সিবিআইয়ের মামলায় রয়েছে, তাই ইডি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করায় কোনও বাধা নেই। আর এবার মানিকের সূত্রে ধরেই একের পর এক ঘনিষ্ঠরা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার স্ক্যানারে রয়েছেন।


আদালতে ইডির আইনজীবী দাবি করেন,  ‘মানিকের ছেলের অ্যাকাউন্টে ২ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকার হদিশ মিলেছে।  ২০১৮ সালে বেঙ্গল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের থেকে নেওয়া হয় টাকা। মানিকের পরিবারের সদস্যদের বেনামে জয়েন্ট অ্যাকাউন্টে প্রচুর টাকা আছে। মানিকের কম্পিউটারের ২টি ফোল্ডারে ৬১ জনের নাম পাওয়া গেছে। ৬১ জনের মধ্যে ৫৫ জনের থেকে চাকরির জন্য টাকা নেওয়া হয়েছে। যাঁরা ঘুষ দিয়েছে, তাঁরাই চাকরি পেয়েছে', এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ।           


আরও পড়ুন, ৪৫ বছরেই সব শেষ, দক্ষিণ দমদমে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু গৃহবধূর


এও দাবি করা হয়, ‘মানিক ভট্টাচার্যর বাড়ি থেকে একটি চিঠি পাওয়া যায়। যে চিঠি মানিক ভট্টাচার্য ও মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো হয়েছিল। মাথাপিছু ৭ লক্ষ টাকা করে নিয়ে ৪৪ জনকে চাকরি, উল্লেখ রয়েছে চিঠিতে’।  মানিক ভট্টাচার্যর গ্রেফতারের পর অভিনব প্রতিবাদ চাকরি প্রার্থীদের। ধর্মতলার মেয়ো রোডে দুর্গা, অসুর থেকে ইডি-পুলিশ সেজে, মানিক গ্রেফতারকে উদযাপন আন্দোলনকারীদের। মেয়ো রোডে দেখা গেল মানিক ভট্টাচার্যের সাজে অসুর সেজেছেন এক বিক্ষোভকারী। আরেকজন সেজেছেন দুর্গা। সেখানে ত্রিশূল হাতে অসুররূপী মানিককে বিদ্ধ করছেন পরাক্রমশালী দেবী। অন্যদিকে,  ব্যাঙ্কশাল কোর্টে মানিক ভট্টাচার্যকে নিয়ে যেতেই উঠল ‘চোর চোর’ স্লোগান। শুধু তাই নয়, জুতোও দেখানো হল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতিকে।