দীপক ঘোষ ও ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা: 'যোগ্যতা (capability) নয়, গুরুত্বপূর্ণ হল বিশ্বাসযোগ্যতা (credibility)। চা-ওয়ালাকে (tea seller) প্রধানমন্ত্রী (PM) করে আমরা তা প্রমাণ করে দিয়েছি', দলের কর্মী সম্মেলনে এহেন মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (sukanta majumder)। বিষয়টি নিয়ে তীব্র কটাক্ষ হেনেছে তৃণমূল (TMC)।


কী বলেছেন সুকান্ত?
যোগ্যতার প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নাম টেনে এনে নতুন বিতর্ক উসকে দিলেন স্বয়ং রাজ্য বিজেপি সভাপতি। দলের কর্মী সম্মেলনে বলেছেন,'যোগ্যতা গুরুত্বপূর্ণ না। তাই আমরা চা ওয়ালাকে প্রধানমন্ত্রী করে সেটা আমরা প্রমান করে দিয়েছি। গুরুত্বপূর্ণ হলো বিশ্বাসযোগ্যতা।' কয়েক দিন আগেই গেরুয়া শিবিরে অস্বস্তি বাড়িয়েছিলেন দলীয় সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। সরাসরি আক্রমণ করেছিলেন সুকান্ত মজুমদারকে। এবার স্বয়ং রাজ্য বিজেপির বক্তব্য ঘিরেই তুঙ্গে উঠেছে বিতর্ক। দলীয় সূত্রে খবর, সৌমিত্র খাঁ-র আক্রমণের জবাব দিতে গিয়েই সুকান্ত ওই মন্তব্য করেছেন। 


কী বলেছিলেন সৌমিত্র খাঁ?
গত ১৯ অক্টোবর বিজেপি সাংসদ স্পষ্ট বলেন, 'সুকান্ত মজুমদার থাকলেও তাঁর কথা আমাকে শুনতে হবে তার কোনও মানে নেই। মানব না। অন্য কোনও নেতাকে মানব না। আমার মাথার ওপরে শুভেন্দু অধিকারী-দিলীপ ঘোষ বাদ দিয়ে অন্য কোনও নেতাকে মানব না। বাংলায় কয়েক জন অযোগ্য বসে। বাংলা জয় করা খুব কঠিন। শুভেন্দুদা, দিলীপদা লড়ছেন। কিন্তু বাকি সব অযোগ্যের ভিড়ে, অযোগ্য নেতৃত্বের বলে চলছে।' সূত্রের খবর, এদিন নাম না করে সৌমিত্রর সেই আক্রমণেরই জবাব দিতে যান সুকান্ত। প্রধানমন্ত্রীর প্রসঙ্গ টানার পাশাপাশি বলেন, 'আমাদের দল পরিবারকেন্দ্রিক নয়, পারিবারিক। একজনের ভুল হলে সকলের ক্ষতি হয়।' এনিয়ে বিজেপিকে তীব্র কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। লক্ষণীয় বিষয় হল, খোদ বিজেপির অন্দর থেকেই গোষ্ঠীকোন্দলের কথা শোনা গিয়েছে। বিজেপির কলকাতা উত্তর শহরতলি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অরিজিৎ বক্সি যেমন বলেন, 'দলের মধ্যে এবিসিডি থাকলে হবে না। এই কারণেই আমরা জিততে পারিনি। Abcd নানা ভাগে বিভক্ত।' এদিন দমদমে অনুষ্ঠিত হয় বিজেপির কলকাতা উত্তর শহরতলি সাংগঠনিক জেলার কর্মী সম্মেলন। সেখানেই সুকান্ত মজুমদারের বিতর্কিত মন্তব্যের পাশাপাশি গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে সরব হয়ে দলের অস্বস্তি বাড়ান অরিজিৎ, পর্যবেক্ষণ অনেকের। রাজনৈতিক মহলের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগকে হাতিয়ার করে, তৃণমূল কংগ্রেসকে বার বার কটাক্ষ করে যে গেরুয়া শিবির, এখন তাদের ঘরেই ফের বিদ্রোহের সুর! কী ভাবে এই গোষ্ঠীকোন্দলের আঁচ সামলাবে দলীয় নেতৃত্ব?


আরও পড়ুন:'শিকড়টি শক্ত ভাবে ধরে থাকা দরকার', মুখ্যমন্ত্রীর থেকে ভাইফোঁটা নেওয়ার পর বললেন শোভন