ময়ুখ ঠাকুর চক্রবর্তী ও সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: বরানগর প্রতিবন্ধী হাসপাতালের (Baranagar Handicap Hospital)  হস্টেল থেকে ছাত্রের (student) দেহ (body) উদ্ধার ঘিরে উত্তেজনা (tension)। হাসপাতালের গেট বন্ধ রেখে বিক্ষোভ (agitation) দেখালেন ছাত্ররা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ঘটনাস্থলে পৌঁছল বরানগর থানার পুলিশ। তাঁদের ঘিরেও বিক্ষোভ দেখালেন পড়ুয়ারা।


কী হয়েছে?
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, বরানগর বনহুগলিতে প্রতিবন্ধী হাসপাতালে হস্টেল থেকে এক ছাত্রের দেহ উদ্ধার হয়েছিল। তার পর থেকেই ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতাল চত্বরে। পড়ুয়াদের অভিযোগ, হাসপাতালে কোনও রকম ইমার্জেন্সি ব্যবস্থা নেই। সেই কারণে সাগর দত্ত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হচ্ছিল প্রিয়রঞ্জন সিংহ নামে ওই পড়ুয়াকে। মাঝরাস্তায় মারা যান তিনি। এর পরই হাসপাতালের গেট বন্ধ করে এভং পরিষেবা বন্ধ রেখে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ছাত্র-ছাত্রীরা। এতেই শেষ নয়। তাঁদের অভিযোগ, খবর পেয়েও দেরিতে এসেছে বরানগর থানার পুলিশ। ফলে তাঁদের ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা। 


পড়ুয়াদের দাবি...
ছাত্ররা জানাচ্ছন, প্রিয়রঞ্জনের হস্টেল রুমের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। কিন্তু তাঁকে ঝুলতে দেখেছিলেন সহপাঠীরা। ফলে দরজা ভেঙে ঢুকে প্রিয়রঞ্জনকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়। বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের বক্তব্য, তখনও পর্যন্ত ওই ছাত্র বেঁচে ছিলেন। তাঁর জন্য কলেজ প্রশাসনের কাছে সাহায্য় চাওয়া হয়। কিন্তু কারও সহযোগিতা পাওয়া যায়নি বলে ক্ষোভ ছাত্রছাত্রীদের। কলেজে কোনও অ্যাম্বুল্য়ান্সও ছিল না বলে দাবি করছেন তাঁরা। কারও সাহায্য় না পেয়ে এক পড়ুয়ার বাইকে করেই প্রিয়রঞ্জনকে  সাগর দত্ত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পৌঁছনোর আগেই সব শেষ বলে জানাচ্ছেন ছাত্রছাত্রীরা। এই পরিণতির জন্য কলেজের পরিকাঠামোর অভাবকেই কাঠগড়ায় তুলছেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, এই প্রতিষ্ঠান পুনর্বাসনের কাজ করে। এমনিতে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিষ্ঠান হলেও WBUHS-র অনুমোদন রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু কোনও সুযোগ-সুবিধা পান না এখানকার ছাত্রছাত্রীরা। দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়ার এমন পরিণতির পর তাঁদের সেই ক্ষোভ তুঙ্গে উঠেছে। হাসপাতাল চত্বর জুড়ে স্লোগান, পোস্টার ছয়লাপ। এদিকে সাগর দত্ত হাসপাতালে এর মধ্য়েই প্রিয়রঞ্জনের দেহ পৌঁছে গিয়েছে। ময়নাতদন্ত হওয়ার কথা। প্রয়োজনে ফরেনস্কিক তদন্তও করা হতে পারে।
কিন্তু প্রশ্ন অনেকগুলো। সত্যি কী হয়েছিল ওই পড়ুয়ার? উদ্ধার করার সময় তাঁর দেহে আদৌ প্রাণ ছিল কি? কলেজ প্রশাসনের বিরুদ্ধে সাহায্য় না করার অভিযোগ কতটা সত্যি? পড়ুয়াদের বিক্ষোভে কি টনক নড়বে রাজ্য প্রশাসনের? উত্তর দেবে সময়।


আরও পড়ুন:ফের উত্তপ্ত গড়িয়া, নরেন্দ্রপুরের পর ফের বোমবাজি, পঞ্চায়েত ভোটের আগে ত্রস্ত এলাকা