টিটাগড়ে স্কুলের ছাদে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় সামনে এল বিস্ফোরণের পর মুহূর্তের ছবি। টিটাগড় সাউথ স্টেশন রোডের ফ্রি ইন্ডিয়া স্কুলের কাছে একটি দোকানের সিসি ক্যামেরা-বন্দি ফুটেজে ধরা পড়েছে আতঙ্ক। জোরাল বিস্ফোরণে আশপাশের বাসিন্দারা ভয় পেয়ে যান। স্কুলে কী ঘটেছে জানতে ভিড় করেন তাঁরা। 


টিটাগড়ে সরকারি স্কুলের ছাদে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতার ৪ জন। ধৃতদের মধ্যে তিনজনই স্কুলের প্রাক্তনী। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয়েছে ১০টি তাজা বোমা। প্রাক্তনীদের সঙ্গে বর্তমান পড়ুয়াদের গন্ডগোলের জেরেই স্কুলে হামলা বলে দাবি পুলিশের। 


গতকাল বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ ক্লাস চলাকালীন টিটাগড়ের ফ্রি ইন্ডিয়া হাইস্কুলের ছাদে বোমা বিস্ফোরণ হয়। স্কুলে সেইসময় প্রায় ৮০০ পড়ুয়া ছিল। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন শিক্ষক ও পড়ুয়ারা। স্কুলের ছাদ থেকে উদ্ধার বোমার সুতলি, স্প্লিন্টার।


অপরাধীরাই টিটাগড়ের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। বেকারদের হাতে বোমা-বন্দুক তুলে দেওয়া হচ্ছে। কোন ভরসায় সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন অভিভাবকরা? প্রশ্ন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের। টিটাগড় সাউথ স্টেশন রোডে ফ্রি ইন্ডিয়া হাইস্কুল লাগোয়া বহুতলের ছাদ থেকে ছোড়া হয়েছিল বোমা। আতঙ্কিত বহুতলের বাসিন্দারা। ছাদে তালা লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি, নিজেদের নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তিত টিটাগড় সাউথ স্টেশন রোডের বাসিন্দারা। 


টিটাগড় বিস্ফোরণকাণ্ডে, NIA তদন্তের দাবি করেছে বিজেপি। এরইমধ্যে, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব অর্জুন সিং। আজ, তিনি বলেন, পুলিশ এখনও ফোন নির্ভর। পুলিশকে এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। ফোন তো লাগবেই, অর্জুনের বক্তব্যের প্রেক্ষিকে পাল্টা মন্তব্য মদন মিত্রের। 



টিটাগড়ে ক্লাস চলাকালীন স্কুলে বোমাবাজির ঘটনায় ১২ ঘণ্টার মধ্যেই ৪ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে ১০টি তাজা বোমা।  



ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়ার কথায়, রাত্রিবেলা অ্যারেস্ট করার পর জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। জিজ্ঞাসাবাদে এরা বোমা ছোড়ার কথা স্বীকার করেছে।  জিজ্ঞাসাবাদে হামলার উদ্দেশ্য জানতে পারি।


কিন্তু এর মধ্যে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হলেন খোদ তৃণমূল নেতা অর্জুন সিং-ই!  অর্জুন সিংহ বলছেন, পুলিশের ভুল পদ্ধতি কোথায় হচ্ছে, ক্রিমিনালদেরকে সোর্স বানায়। ক্রিমিনাল রা অ্যাডভান্টেজ নেয়। সোর্স বানিয়ে দিল এবার ও জুয়া খেলাবে, হেরোইন বিক্রি করবে। ও না কি সোর্স। এটা খুব খারাপ পদ্ধতি।


কাল আমি একটা ছেলের থেকে খবর পেয়ে পুলিশকে জানাই। টহলদারি করে কী করবেন? খবর না থাকলে, পেট্রোল ডিজেল জ্বালিয়ে কী করবেন? অভিজ্ঞতা থেকে বলব, পুলিশকে সমন্বয় করতে হবে। টোটালটা ফোন বেসড।



এই চাপানউতোরের মাঝেই এদিন টিটাগড় ফ্রি ইন্ডিয়া হাইস্কুলে যান কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। 
টিটাগড় বিস্ফোরণকাণ্ডে শনিবার NIA তদন্তের দাবি তুলেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এদিন একই দাবি শোনা গেছে রাজ্য বিজেপি সভাপতির গলাতেও। সবমিলিয়ে, টিটাগড় বিস্ফোরণকাণ্ড নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।