ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ও পার্থপ্রতিম ঘোষ, বীরভূম: ফের রাজ্যে গরু পাচারের চেষ্টা। পাচারের আগেই পুলিশের জালে গাড়ির চালক, উদ্ধার গরুও। ঘটনা বীরভূমের, যেখানে এখন গরুপাচার (Cow Smuggling) নিয়েই তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই (CBI)।
ফের গরু উদ্ধার:
বীরভূমের রামপুরহাটে উদ্ধার হয়েছে ভিনরাজ্য থেকে আনা ৪৮টি গরু। গ্রেফতার করা হয়েছে গরু নিয়ে আসা পিক আপ ভ্যানের চালককে। পুলিশ সূত্রের খবর, বীরভূমের (Birbhum) নলহাটির পশুহাটে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিহার থেকে আনা হয়েছে গরুভর্তি গাড়ি।
গরুপাচার মামলা নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় রাজ্য। ওই ঘটনায় তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই। গরু পাচারকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তারও আগে গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেন। অনুব্রতর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছেন সিবিআই আধিকারিকরা। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে অনুব্রতর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলকে। গরু পাচার মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে বীরভূমের একাধিক ব্যাঙ্কে গিয়েছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নজরে রয়েছে একাধিক চালকল ও জমি। এমন পরিস্থিতিতে সেই বীরভূমেই ফের গরু পাচারের চেষ্টা।
পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার সকালে রামপুরহাটে (Rampurhat) সুড়িছুয়ায় বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানায় মস্তানমোড়ের কাছে ২টি গরুভর্তি লরি ও একটি পিকআপ ভ্যান আটক করা হয়। ২টি লরির চালক পালিয়ে গেলেও বৈধ কাগজপত্র না থাকায় পিক আপ ভ্যানের চালককে পাকড়াও করা হয়। পুলিশ সূত্রে দাবি, ধৃত চালক জেরায় স্বীকার করেছেন, বিহার থেকে আনা হচ্ছিল গরুভর্তি গাড়ি। গন্তব্য ছিল নলহাটির পশুহাট। ধৃত চালক বিহারের বাঁকা জেলার বাসিন্দা।
তদন্ত এবং জিজ্ঞাসাবাদ:
গরুপাচার মামলাতেই শুক্রবার শান্তিনিকেতনে সিবিআইয়ের ক্যাম্প অফিসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় আহমেদপুরের রাইস মিল মালিক, অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রাজীব ভট্টাচার্যকে। যিনি তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির পদেও রয়েছেন। রাজীবের বিরুদ্ধে তথ্য, তিনি অনুব্রতর স্ত্রীর চিকিত্সায় বেশ কয়েক লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। এতে অন্যায় কোথায়, সেই প্রশ্ন তোলেন রাজীব। তিনি বলেন, 'হাসপাতালে ভর্তি থাকা, আশঙ্কাজনক কাউকে টাকা দিয়ে সাহায্য করাটা কি অপরাধ? আমি নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছি। আমার টাকা আমি দিয়েছি। জানি, আমাকে ফের ডাকবে ইডি, সিবিআই। আমি আবার যাব। সহযোগিতা করব।'
বিজেপির (BJP) বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, 'রাজীব বিভিন্ন ভাবে গরু পাচার মামলায় জড়িত। তাই অনুব্রতকে দেখে ৬৬ লক্ষ টাকা দিয়েছে। তার হিসেব দিতে পারচে না।'
তদন্তে সিআইডিও:
এই মামলায় কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির পাশাপাশি তদন্তে নেমেছে রাজ্য পুলিশের সিআইডিও (CID)। সিবিআই এই মামলায় আগেই গ্রেফতার করেছে ব্যবসায়ী এনামুল হককে। অন্যদিকে এনামুলের ৩ আত্মীয়ের অফিসে দিন দুয়েক আগে তল্লাশি করেছে সিআইডি। সূত্রের খবর, এনামুলের তিন আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের পাওয়া যায়নি। পরিবারের তরফে জানানো হয়, তাঁরা কর্মসূত্রে বিদেশে রয়েছেন। সিআইডি নোটিস দিয়ে বলেছে, ওই ৩ জন যেন তদন্তকারী অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
আরও পড়ুন: বেহাল রাস্তায় ভোগান্তি, সারানোর দাবিতে লিফলেট বিলি খোদ পঞ্চায়েত প্রধানের