সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: চাকরি বিক্রির অভিযোগে যাঁকে সিবিআই (CBI) জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল, সেই তৃণমূল কাউন্সিলরই এবার চাকরি মেলার আয়োজক। ব্য়ারাকপুরের (Barrackpore) তৃণমূল কাউন্সিলর জয়দীপ দাসের উদ্য়োগে আয়োজিত হল কর্ম-মেলা। যা নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি (BJP)।


নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত এখনও চলছে। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী থেকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি জেলে বন্দি। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েছেন তৃণমূলের একাধিক নেতা। তার মধ্য়ে রয়েছেন ব্য়ারাকপুরের তৃণমূল কাউন্সিলর জয়দীপ দাস। যাঁকে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সিবিআই ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল।


তাঁর বাড়িতেও হানা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় এই গোয়েন্দা এজেন্সি। চাকরি বিক্রিতে অভিযুক্ত সেই তৃণমূল কাউন্সিলরই ব্য়ারাকপুরে আয়োজন করলেন চাকরি মেলার। যা নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিতে দেরি করেনি বিজেপি। তৃণমূল কাউন্সিলর অবশ্য় বিরোধীদের আক্রমণে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এই চাকরি মেলায় অংশ নেন অনেক প্রার্থী। 


উল্লেখ্য, নবম-দশমের মেধাতালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও দুজনের চাকরি না হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সেই প্রেক্ষিতে গত মাসেই সালমা সুলতানা এবং রিক্তা চট্টোপাধ্যায়কে নিয়োগের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। এক সপ্তাহের মধ্যে সুপারিশপত্র দিয়ে চাকরি দিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।  


অন্যদিকে প্রাথমিক স্কুলে পোস্টিং দুর্নীতি মামলায়, CBI তদন্তের উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। CBI-কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশের পাশাপাশি, মূল মামলাকারীদের নোটিস দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। 


কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে, প্রাথমিক স্কুলে পোস্টিং দুর্নীতি মামলায়, সোমবার একদিকে যখন ৫০ জন শিক্ষককে নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠায় CBI,
সেই মামলাতেই অন্যদিকে, CBI তদন্তের উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। টাকার বিনিময়ে স্কুলে চাকরি বিলির পর, সামনে এসেছে, প্রাথমিক স্কুলে পোস্টিং দুর্নীতির অভিযোগও! প্রথমে হাইকোর্টে এই মামলা প্রসঙ্গে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখে উঠে এসেছিল,


ডিজাইনড কোরাপশন অর্থাৎ পরিকল্পিত দুর্নীতির কথা। এই মামলাতেই, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি ও তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে ম্য়ারাথন জেরা করেছিল সিবিআই। এরপর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মানিক। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও রেকর্ড, হাইকোর্টের এজলাসে চালিয়ে দেখার উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। 


প্রাথমিকে পোস্টিং দুর্নীতি মামলায়, CBI তদন্তের নির্দেশের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গেছিল রাজ্য সরকার। সেই মামলার প্রেক্ষিতে সোমবার বিচারপতি এ এস বোপান্না এবং বিচারপতি পিএস নরসিমহার বেঞ্চ, CBI তদন্তের উপর স্থগিতাদেশ দিল। পাশাপাশি মূল মামলাকারীদের নোটিস দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তাঁরা। প্রাথমিকে পোস্টিং দুর্নীতির তদন্ত এবার কোন পথে CBI এগিয়ে নিয়ে যায়, সেটাই দেখার।