সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: পানিহাটি-উত্তরপাড়ার মাঝখানে গঙ্গা থেকে দিনে-দুপুরে বালি চুরির অভিযোগ উঠল। মাঝ নদীতে নৌকা দাঁড় করিয়ে তোলা হচ্ছে বালি। তারপরে সেই বালি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কামারহাটিতে। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বটতলা ঘাটে বালি নামানোর কাজ চলছে নিয়মিত। সেই ছবি ধরা পড়েছে এবিপি আনন্দর ক্যামেরায়
উত্তরপাড়া-কোতরং পুরসভা শ্রীরামপুরের মহকুমা শাসকের কাছে বালি চুরির অভিযোগ করেছে। পোর্ট ট্রাস্ট, সেচ দফতর ও ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। জানানো হয়েছে ব্যারাকপুর ও চন্দননগর কমিশনারেটেও। তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রীরামপুরের মহকুমা শাসক।
মাঝ গঙ্গায় সারি সারি নৌকা। কিন্তু সবগুলিই এক জায়গায় দাঁড়িয়ে। দেখা যাচ্ছে, নৌকার ভিতরে রয়েছে প্রচুর বাঁশ। বাঁশের মাথায় বাঁধা লোহার বালতি। সেই বালতি ডুবিয়ে দেওয়া হচ্ছে নদীর জলে। তারপর বালতি ভর্তি করে তুলে আনা হচ্ছে বালি। উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটি ও হুগলির উত্তরপাড়ার মাঝে গঙ্গা থেকে এভাবেই বালি চুরি চলছে অবাধে।
বিপুল পরিমাণ বালি নদীবক্ষ থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ফেলা হচ্ছে, কামারহাটি পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বটতলার ঘাটে।স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন, প্রকাশ্যে বালি চুরি চললেও, কী করছে প্রশাসন? এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, গঙ্গাবক্ষ থেকে অবাধে বালি চুরির জেরে দেখা দিয়েছে আরেক বিপদ। উত্তরপাড়া-সহ হুগলির গঙ্গা তীরের এলাকায় ভাঙন দেখা যাচ্ছে। কোথাও গাছ উল্টে গিয়েছে। কোথাও বিল্ডিং-এর ভগ্নাবশেষ তলিয়ে গিয়েছে।
বিজেপির অভিযোগ:
শ্রীরামপুর সংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি মোহন আদক বলেন, 'একদিকে মুখ্যমন্ত্রী বলছে অবৈধ বালি তুলবেন না, পরদিনই শাসকদলের তরফে অবৈধ বালি তোলার হিড়িক পড়ে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথার সঙ্গে কাজের কোনও মিল নেই। পশ্চিমবঙ্গের মাথায় আরও দুর্ভোগ এসে পড়বে।'
পুর কর্তৃপক্ষের আশ্বাস:
লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে কামারহাটি পুরসভা। পুরপ্রধান ও তৃণমূল নেতা গোপাল সাহা বলেন, 'অভিযোগ আসেনি। লিখিত অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' বিষয়টি SDO’কে জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছে উত্তরপাড়া পুরসভা। উত্তরপাড়া-কোতরং পুরসভার চেয়ারম্য়ান দিলীপ যাদব বলেন, 'এসডিওকে ইনফর্ম করেছি। বালি নিয়ে যাচ্ছে। আমরা কোনও বিষয় মনে করলে, রেসপেকটিভ জায়গায় ইনফর্ম করি। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।'
শ্রীরামপুরের মহকুমা শাসক জানিয়েছেন, পোর্ট ট্রাস্ট, সেচ দফতর, ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর, ব্যারাকপুর ও চন্দননগর কমিশনারেট এবং ব্যারাকপুরের এসডিও-কে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কে বা কারা অবৈধ বালি তোলার সঙ্গে যুক্ত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিয়েতে নারাজ, 'প্রেমিকার ছেলেকে অপহরণ' সোনারপুরে !