উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, বিরাটি: ব্যাগে করে শিশু পাচার করতে গিয়ে ধরা পড়ল মহিলা। ট্রেনের মধ্যে ব্যাগে করে একবছরের এক শিশুকে নিয়ে যাচ্ছিল মহিলাটি। জিআরপির সন্দেহ হওয়ায় বিরাটি স্টেশনে মহিলাকে আটক করা হয়। শিশু চুরির অভিযোগে স্টেশন চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা। এর পেছনে বড় শিশু পাচারের গ্যাং রয়েছে বলে সন্দেহ জিআরপির। উদ্ধার হওয়া শিশুর পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। 


তুলকালাম পরিস্থিতি বিরাটি স্টেশনে। সেই ঘটনা নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত। এক মহিলা ব্যাগে করে এক শিশুকে স্টেশনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তাকে আটক করে আরপিএফ। তারপরেই বিরাটি স্টেশনে চরম উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ভিড় সরাতে লাঠিচার্জ করা হয়।


এই শিশু ও মহিলাকে যখন নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি ছিল, তাঁদের হাতে ওই মহিলাকে ছেড়ে দিতে হবে। তা শোনেনি পুলিশ, তারপরেই উত্তেজনা ছড়ায়। এরপরেই ক্ষুব্ধ জনতা রেললাইন অবরোধ করে। তাঁদের দাবি, পুলিশের লাঠিচার্জে একজনের মাথা ফেটেছে। সূত্রের খবর, প্রথম ওই মহিলাকে একটি ঘরে আটকে রাখে পুলিশ। তারপর তাকে দমদমে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।


সাত সকালে বিরাটি স্টেশনে তুলকালাম। চলন্ত ট্রেনে ব্যাগবন্দি করে শিশুকে নিয়ে যাওয়ার গুজবের জের। ছেলেধরা সন্দেহে ট্রেনের ভিতরেই মহিলাকে মারধরের অভিযোগ উঠল যাত্রীদের একাংশের বিরুদ্ধে।


কী অভিযোগ?
বুধবার সকালে দত্তপুকুর থেকে শিয়ালদহগামী লোকাল ট্রেনে ওঠেন এক মহিলা। তাঁর হাতে ছিল একটি ব্যাগ। ব্যাগের মধ্যে কিছু নড়াচড়া করছিল ও ব্যাগ থেকে কান্নার আওয়াজ আসছিল বলে দাবি করেন যাত্রীদের একাংশ। সঙ্গে সঙ্গে উত্তেজনা তৈরি হয় মহিলা কামরায়। ছেলেধরা সন্দেহে মহিলাকে মারধরের অভিযোগ ওঠে।  ট্রেনটি বিরাটি স্টেশনে পৌঁছলে জিআরপি-র হাতে তুলে দেওয়া হয় অভিযুক্তকে। তখন মহিলার কোলেই ছিল শিশুটি। মহিলার শাস্তির দাবিতে বিরাটি স্টেশনে ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় যাত্রীদের একাংশ। অবরোধের জেরে আটকে পড়ে একাধিক ট্রেন। অফিস টাইমে চূড়ান্ত দুর্ভোগে পড়েন নিত্যযাত্রীরা।  যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, বিক্ষোভ তুলতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। কয়েকজনের মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। এক ট্রেনযাত্রী দীপালি হালদার বলেন, 'বাচ্চা চুরি হওয়ার জন্য আমরা যখন পুলিশের কাছে গেছি, পুলশি জনগণকে সমর্থন না করে, মেরে জনগণের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। যার জন্য আমরা রেল অবরোধ করেছি।'


যদিও মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদের পরে বারাসতের জিআরপি জানিয়েছে, শিশু চুরির নামে গুজব রটানো হয়। ব্যাগের মধ্যে কোনও শিশু ছিল না। ব্যাগের মধ্যে তার জামাকাপড় ছিল। বারাসাতে শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসেছিলেন দমদমের বাসিন্দা ওই মহিলা। শিশুটি তাঁর নিজের। দিন কয়েক ধরে রাজ্যের নানা প্রান্তে ছেলেধরার অভিযোগে গণপ্রহারের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নেমে আক্রান্ত হতে হয় পুলিশকেও। গুজব নিয়ে সতর্কতামূলক প্রচারের পাশপাশি গুজব ছড়ানোয় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে এদিনের ঘটনা। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে


আরও পড়ুন: হলং অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত 'নস্টালজিয়া'! বাতাসে ভাসছে বহু প্রশ্ন! কতটা মিলল উত্তর?