সমীরণ পাল, হিঙ্গলগঞ্জ: ফের খারাপ রাস্তার কারণে রোগীর দুর্ভোগ। কাদা ভর্তি মাটির রাস্তায় হাঁটু সমান জল। তাই অসুস্থ প্রৌঢ়াকে দোলনায় বসিয়ে, বাঁশ বেঁধে কাঁধে করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন আত্মীয়রা। উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের গোবিন্দকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মালেকান ঘুমটি গ্রামের ঘটনা। পরিবারের দাবি, ৫৭ বছরে জামেলা বিবি হার্টের রোগী। অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। গোবিন্দকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান দেবেশ মণ্ডল এখন হিঙ্গলগঞ্জের তৃণমূলের বিধায়ক। বিজেপির কটাক্ষ, খারাপ রাস্তাই বলে দিচ্ছে তৃণমূল আমলে উন্নয়ন বেহাল। বাম আমলের খারাপ রাস্তা মেরামত করতে সময় লাগছে, মানুষকে খেপিয়ে লাভ নেই, দায় এড়িয়েছেন হিঙ্গলগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক।
হিঙ্গলগঞ্জের গোবিন্দকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মালেকান ঘুমটি গ্রাম। একে মাটির রাস্তা, তার উপর বৃষ্টি। আর তাতেই সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয়রা। মঙ্গলবার বিকালে ৫৭ বছরের জামেলা বিবি হার্টের রোগী। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হয়। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাস্তাই নেই। রিক্সা ভ্যান তো দূরের কথা পেয়ে হেঁটে যেতে গেলেও হাঁটু জল কাদা মাটির রাস্তা। তাই আত্মীয়স্বজনরা জামেলা বিবিকে দোলনায় বসিয়ে তার মধ্যে বাঁশ গলিয়ে কাঁধে করে হাসপাতালে নিয়ে যান। এক সময় এই গোবিন্দকাটি পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন বর্তমান বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল। তারপরও গ্রামের রাস্তার এই দুর্দশা। দেবেশ মণ্ডল যখন প্রধান হন তার গলায় ফুলের মালা পরিয়ে এই রাস্তা দিয়ে কাঁধে করে নিয়ে গিয়েছিলাম আক্ষেপ করে বললেন সিরাজুল গাজী। অভিযোগ, ছোট ছোট বাচ্চারা হাঁটু জলে জামা গুটিয়ে স্কুলে যেতে। সাংবাদিকদের প্রশ্নে ক্ষেপে গিয়ে বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল বলেন, "এগুলো আপনাদের তৈরি করা। কোনও কাজ নেই মানুষকে খেপিয়ে দিয়ে লেলিয়ে দিয়ে এইসব গুলো করছে।''
হিঙ্গলগঞ্জের সাহেবখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের রমাপুর পূর্ব ঘোষ পাড়াতেও বেহাল রাস্তা। গ্রামবাসীদের দাবি, ২০২০-’২১ অর্থবর্ষে ৩ লক্ষ ৬৩ হাজার ৬০০ টাকার টেন্ডার পাস হওয়ার পর কাজ শুরু হলেও কয়েকদিন পর বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকে গ্রামের রাস্তা সেই ভাবেই পড়ে আছে। পড়ুয়ারা কাদা ভর্তি মাটির রাস্তা ধরেই স্কুলে যায়। অন্তঃসত্ত্বা ও অসুস্থদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে সমস্যায় পড়তে হয় বলে অভিযোগ। এ নিয়ে সম্প্রতি বিক্ষোভও দেখান গ্রামবাসীরা। সাহেবখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান আগের বোর্ডের ঘাড়ে দায় ঠেলেছেন।