সমীরণ পাল ও সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তর ২৪ পরগনা ও হুগলি : কোথায় শুধু মুখে সতর্কতা, মাস্ক (Mask) পরুন বলে ছাড়। কোথাও আবার 'শিক্ষা' দিতে সাইকেলের চাকার হাওয়া খুলে নেওয়া বা কান ধরে উঠ-বোস করানো। করোনা (Corona) সংক্রমণ রুখতে জেলায় জেলায় সারাদিন ধরে দেখা গেল এমনই সব ছবি। বারবার আর্জি জানিয়েও করোনা সচেতনতায় হুঁশ ফিরছে না একাংশের। মারণ ভাইরাসের সংক্রমণের তীব্রতা যত বাড়ছে, তার সঙ্গে এবার ততই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পুলিশ (Police)-প্রশাসনের (Administration) কড়াকড়ি। প্রসঙ্গত, রাজ্যে বাড়তে থাকা সংক্রমণের মাঝে একাংশের উদাসীন মনোভাবে নিয়ে বৃহস্পতিবারই উষ্মা প্রকাশ করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সতর্ক করে দিয়েছেন, 'কথা শুনছেন না অনেকে, মাস্ক পরছেন না। আগামী ১৫ দিন আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ, পরিস্থিতি দেখে প্রয়োজনে আরও কড়া বিধিনিষেধ (Covid Norms) আরোপ করতে হবে। আর পুলিশকে বলব, যারা নিয়ম মানছেন না, তাদের ক্ষেত্রে একটু শক্ত হাতে ব্যবস্থা নিতে।'


মুখ্যমন্ত্রী যে 'বার্তা'-র আগেই জেলায় জেলায় পুলিশ-প্রশাসন তৎপর হতে শুরু করে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার বেলঘরিয়া বাজারে হানা দেন কামারহাটি পুরসভার প্রশাসক। অন্যদিকে, হুগলির চুঁচুড়ায় করোনা বিধি অমান্য করে বসা সাপ্তাহিক হাট বন্ধ করে দেন এলাকার বিধায়ক। সর্বাধিক দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে কলকাতার পরেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। সেখানে দৈনিক সংক্রমণ আড়াই হাজারের গণ্ডি ছাড়িয়েছে। বেলাগাম সংক্রমণ রুখতে বৃহস্পতিবার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে কামারহাটি বাজারে যান পুরপ্রশাসক। দেখেন মাছব্যবসায়ীর মুখে মাস্ক নেই। সঙ্গে সঙ্গে ধমক পুলিশের।


রাস্তায় বেরিয়েছিলেন এক তরুণ। অথচ মুখে মাস্কের কোনও বালাই নেই! দেখেই আটকালেন কামারহাটির পুরপ্রশাসক। তাঁকে কান ধরতে বাধ্য করার পরার নিজে হাতেই পরিয়ে দিলেন মাস্কও। আরেক তরুণও করোনাকে ডোন্ট কেয়ার! সবখ শেখাতে তাঁর সাইকেলের চাকার হাওয়া খুলে দেয় পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে মাস্ক না পরার অজুহাত হাজির। যদিও তাতে গলানো যায় আইন রক্ষাকারীদের মন। এদিকে, করোনা বিধি উড়িয়ে বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক হাট বসেছিল হুগলির চুঁচুড়ার পেয়ারাবাগানে। এলাকা পৌঁছে তা বন্ধ করে দেন স্থানীয় বিধায়ক অসিত মজুমদার।


২২ জানুয়ারি চন্নদনগর কর্পোরেশনের ভোট। তার আগে সেখানকার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ৫ কর্মীর করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তা নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে এলাকায়। হুগলি জেলায় দৈনিক করোনা সংক্রমণের হার ৩ দিনে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।


আরও পড়ুন- কথা শুনছেন না, মাস্ক পরছেন না অনেকে, প্রয়োজনে আরও কড়া বিধিনিষেধ হতে পারে, জানালেন মমতা