সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: স্কুল কলেজ খোলার ঘোষণার দিনই পাড়ায় পাড়ায় শিক্ষালয়ের (Paray Sikhshaloy) ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেই মতোই হাবরা এক নম্বর বিডিও অফিসে মনোরম পার্ক ফুল বাগান লেকের মধ্যেই ক্লাস করল সপ্তম শ্রেণীর ছাত্ররা। প্রথম দিনের পড়াশোনায় খুশি তারা।


মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েক পাড়ায় শিক্ষালয় কর্মসূচীর মধ্যেই হাবরা বিডিও অফিসে এসে উপস্থিত হয় প্রতিবেশী প্রফুল্লনগর বিদ্যামন্দিরের পঞ্চাশজন ছাত্র। প্রকৃতির মনোরম পরিবেশে পড়াশোনার মধ্যে কেটে গেল তাদের প্রথম দিন। করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল বন্ধ থাকায় গত দুটো বছর অনলাইন ক্লাস করতে করতে বিরক্ত এসে গিয়েছিল তাদের মধ্যে। অনলাইন ক্লাস করতে তাদের আর একেবারেই ভালো লাগছিল না। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হচ্ছিল না। প্রিয় শিক্ষকদের কাছ থেকে সামনা সামনি শিক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। অবশেষে পাড়ায় শিক্ষালয় কর্মসূচী শুরু হওয়ায় তাদের সেই মনের কষ্ট দূর হয়ে গেল। রবি ঠাকুরের শান্তিনিকেতনের কায়দায় গাছ-গাছালি, ফুল-পাখালির মধ্যে ক্লাস করে তারা খুবই খুশি। 


শিক্ষকদের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে যে, এমন মনোরম পরিবেশে ক্লাস করতে পেরে খুব খুশি ছাত্ররা। সুন্দর পরিবেশে পড়াশোনা করতে ওরা খুবই মজা পেয়েছে। তার সঙ্গে উপরি পাওনা হিসেবে তারা পেয়েছে খাতা ও কলম। জানা য়াচ্ছে, হাবরা এক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অজিত সাহা ছাত্রদের জন্য একটি করে খাতা ও কলমের ব্যবস্থা করেন। শুধু পড়াশোনা করেই ক্ষান্ত হয়নি পড়ুয়ারা। পাশের লেকে তারা বোটিংও করার আবদার করে। সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেন সভাপতি। টানা দুটো বছর স্কুল বন্ধ থাকায় দেখা হয়নি বন্ধুদের সঙ্গে। এতদিন পর বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়ে, তার সঙ্গে উপহার ও লেকে বোটিং করে খুবই খুশি প্রফুল্লনগর বিদ্যামন্দিরের ছাত্ররা। সভাপতি অজিত সাহা জানিয়েছেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাড়ায় শিক্ষালয় কর্মসূচী অনুযায়ী এইভাবে আরও কিছুদিন ক্লাস নেওয়া যেতে পারে, তাহলে এইভাবে শিক্ষাদান চালিয়ে যাওয়া যেতে পারে।


যদিও এই কর্মসূচীকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। বিজেপি নেচা নীলরতন মিত্রের অভিযোগ, স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ নেই। শিক্ষা ব্যবস্থার কোনও পরিকাঠামো নেই। এমন একটা পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে চেয়ে পুরসভা ভোটের আগে চমক দিকে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। এতে ভোটে কোনও লাভ করতে পারবে না শাসকদল। নীলরতন মিত্রের দাবির পাল্টা অজিত সাহা জানিয়েছেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষা ব্যবস্থাকে অস্বীকার করতে চাইছে বিজেপি। এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিনব ভাবনা। আর পাড়ায় শিক্ষালয় কর্মসূচীর জন্য ওঁকে অনেক ধন্যবাদ। পড়ুয়ারা কতটা খুশি হয়েছে, তা দেখাই যাচ্ছে।