সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: প্রথমে আইএসএফ, তারপর কংগ্রেস। এবার প্রকাশ্য জনসভা থেকে তৃণমূলকে হুমকি দিলেন যুব কংগ্রেস নেতা। সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। ঘটনাস্থল উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা।
কী বলেছেন ওই নেতা:
দেগঙ্গার বেড়াচাঁপাতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন রাজ্য যুব কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি শাহাদাব সিদ্দিকি। সেখানেই তৃণমূলকে নিশানা করেন তিনি। ওই ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, 'আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের বন্ধুরা বোমা, মেশিন ও পিস্তল বাড়িতে রেখে এসে নির্বাচন করুন। আর যদি বোমা, মেশিন, পিস্তল, লাঠি বের করেন কংগ্রেস তার উচিত জবাব দেবে এবং ভোটের দিন সন্ত্রাস করলে কংগ্রেস দেখে নেবে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে দুই কোটি মানুষকে ভোট দিতে দেননি। কংগ্রেস কর্মীদের ডেকে নিয়ে হত্যা করেছেন, জেলে ভরেছেন, আমরা আর ভয় পাই না, আমরা জেলে যেতে প্রস্তুত আছি এবং রক্ত দিতেও রাজি আছি।' যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ।
এই হুমকি ভিডিও ভাইরাল হতেই রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে দেগঙ্গায়। হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেস নেতা শাহাদাব সিদ্দিকির দাবি, এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে সন্ত্রাসমুক্ত নির্বাচন চাই। কংগ্রেস ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তৃণমূলের নেতারা বোমা, পিস্তল বের করলে কংগ্রেসকর্মীরা জবাব দেবেন। পাশাপাশি ভোটের দিনে গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই হবে বলে জানান তিনি।
বিজেপির কটাক্ষ:
বারাসাত সংগঠনিক জেলার বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তরুণ কান্তি ঘোষ বলেন, 'কংগ্রেস নেতার এই হুমকি কাগজে লেখা বাঘের হুমকির মত। কারণ কংগ্রেস থেকেই তৃণমূলের উৎপত্তি হয়েছে। সিপিআইএমের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বাংলায় নিজের কর্মীদের খুন হয়েছে, কিন্তু ক্ষমতা হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে কংগ্রেস কোনও প্রতিবাদ করেনি। গোটা রাজ্যে কংগ্রেস শূন্য হয়েছে, কেন্দ্র থেকেও শূন্য হবে। কংগ্রেস নেতার হুমকি সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্তি করবে। আমরা তৃণমূলের চোখে চোখ রেখে লড়াই করব।'
কংগ্রেসের এই হুমকিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ দেগঙ্গা তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মফিদুল হক সাহাজি। তিনি বলেন, 'কংগ্রেস নেতা যে কথাগুলো বলেছেন সেগুলো সন্ত্রাসবাদীদের মুখে মানায়। কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মুখে মানায় না। কংগ্রেসের কোন অস্তিত্ব নেই তাই তাদের এই হুমকিতে তৃণমূল আতঙ্কিত নয়।' তাঁর আরও দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন দেখে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট হবে এবং প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় দখল করবে।
আরও পড়ুন: চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতালে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি