উমেশ তামাঙ্গ,দার্জিলিং: ফের পাহাড়ে ধস। ভোগান্তিতে জাতীয় সড়ক। এবার ফের কালিম্পং জেলার মাল্লি বাজারের কাছে ধস নেমে ভোগান্তির মুখে আটকে  ১০ নং  জাতীয় সড়ক। এদিকে যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে এই রাস্তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এদিকে ভূমিধসের জেরে সিকিমের সঙ্গে যুক্ত এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা আটকে ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। ভেঙে পড়েছে গাছও। যদিও কারও হতাহতের খবর আসেনি।


গত মাসের শেষেও একই পরিস্থিতি ছিল। ১০ নং জাতীয় সড়কে নেমেছিল ধস। ২৯ মাইল থেকে গেইলখোলা পর্যন্ত ১০ নং জাতীয় সড়কে ধস নেমেছিল। কালিম্পং-শিলিগুড়ি সংযোগকারী ১০ নং জাতীয় সড়কে বন্ধ ছিল যান চলাচল। সিকিম ও ভুটান পাহাড়ে অবিরাম বৃষ্টি, জলপাইগুড়ির দোমোহনিতে ছিল হলুদ সতর্কতা।  গেইলখোলা এলাকায় একটি বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা করেছিল প্রশাসন। যদিও সার্বিক ভাবে গতমাস থেকেই পাহাড়ের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।


মূলত গত মাস থেকেই অতিবৃষ্টি শুরু হয়েছে উত্তরবঙ্গে। যার জেরে সমস্যা বেড়েছে বাসিন্দাদের। লাগাতার বৃষ্টির জেরে কার্যত বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের জনজীবন। এদিকে সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে তিস্তায় জলচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে গত মাস থেকেই। এদিকে তার উপরে রাম্বি ও কালিঝোরা ড্যামের থেকেও জল ছাড়া হয়েছিল।যার জেরে জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল তিস্তা বাজার এলাকা। তিস্তা ব্যারেজ থেকে বারংবার জল ছাড়তেই ফুলে ফেঁপে উঠেছিল।


তিস্তার জল ঢুকে প্লাবিত হয়ে পড়ে জলপাইগুড়ির মালবাজারের টোটগাঁও। ৫০টিরও বেশি পরিবার জলবন্দি হয়ে পড়ে। আশ্রয় নেয় স্থানীয় স্কুলে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে পাহাড়ে বৃষ্টি হলেই তিস্তারজলে ভাসছে গ্রাম। বিঘার পর বিঘা চাষের জমি, বাড়ি-ঘর, নদীর গ্রাসে চলে যাচ্ছে। স্থায়ী বাঁধের দাবি বারবার জানিয়েও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। পাশাপাশি, সমতলেও বৃষ্টি হচ্ছে। জলপাইগুড়ি শহরের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড জলমগ্ন।


আরও পড়ুন, মঙ্গলে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা, সতর্কবার্তার আওতায় আপনার জেলা ? আগামীকাল কেমন আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গে?


এদিকে, মাস পড়তে টানা বৃষ্টিতে তো রাশ পড়লই না, উল্টে লাগাতার বৃষ্টিতে এবার উদ্বেগ বাড়ছে।গত কয়েকধরেই একটা বৃষ্টি হয়ে চলেছে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, উত্তর দিনাজপুর, দার্জিলিং ও কালিম্পঙে।  এর ফলে তিস্তা, জলঢাকা-সহ একাধিক নদীতে জলস্তর বাড়তে পারে।  গতবছর ৩ অক্টোবর, ভোররাতে প্রবল বৃষ্টিতে ফেটে যায় উত্তর সিকিমের দক্ষিণ লোনক লেক। হ্রদভাঙা সেই বিপর্যয়ে প্রায় ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছিল!সর্বগ্রাসী তিস্তা তছনছ করে দিয়েছিল উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকাকে। সিকিমের দুর্যোগে তাই এবারও সিঁদুরে মেঘ দেখছে বাংলা। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।