রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: উত্তরবঙ্গে ঝড়ের তাণ্ডব। জলপাইগুড়িতে দুর্যোগে মৃত্যু হল ৫ জনের, আহত অনেকে। তড়িঘড়ি বিশেষ বিমানে উত্তরবঙ্গে পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার যাচ্ছেন রাজ্যপালও, যাবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করতে আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে জানালেন প্রধানমন্ত্রী।
মাত্র কয়েক মিনিটের ঝড়। আর সেই ঝড়ই কেড়ে নিল ৪ জনের প্রাণ। ভেঙে পড়ল গাছ, উড়ে গেল মাথার ছাদ। রবিবার পশ্চিমি ঝঞ্ঝার প্রভাবে জলপাইগুড়ি , কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারে হল ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি। আর এই ঘটনার খবর পেয়েই রবিবার রাতে বিশেষ বিমানে উত্তরবঙ্গে পৌঁছলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাগডোগরা বিমান বন্দরে নেমে রাতেই পৌঁছে যান জলপাইগুড়ি।
এই ঘটনার খবর পেয়েই সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ম়ৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, 'যত দ্রুত সম্ভব বাড়িঘর তৈরি করতে হবে। যতক্ষণ বাড়িঘর তৈরি না হচ্ছে ততক্ষণ রিলিফ ক্যাম্পে সকলকে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। খাওয়া দাওয়াও দেওয়া হবে সেখানে। প্রশাসন প্রশাসনের মতো কাজ করে যাবে। তবে যেহেতু ভোটের দিন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে তাই সব কথা আমি বলতে পারি না। যা কথা বলার হয়ে গিয়েছে।'
এর আগে বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, আমার কাছে মানুষের ভালো থাকাটাই শেষ কথা। আজ যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়েছেন জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারের মানুষেরা, তাতে এই মুহূর্তে একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমার তাঁদের কাছে পৌঁছে যাওয়াটাই আশু কর্তব্য। আজকেই আমি জলপাইগুড়ি পৌঁছে যাচ্ছি। আহতদের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং প্রশাসন দিবারাত্রি আছে।
পাশাপাশি, রাজভবন সূত্রে খবর সোমবার জলপাইগুড়ি যাচ্ছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও। আহত এবং মৃতদের পরিবারের সঙ্গেও দেখা করবেন তিনি। এদিকে, জলপাইগুড়ির এই ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে সমবেদনাও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রশাসনের পাশাপাশি বঙ্গ বিজেপির কর্মকর্তাদেরও সেখানে গিয়ে পরিবারগুলির পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন তিনি।
রবিবার দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ জলপাইগুড়ি সহ আরও দুই জেলায় ঝড়ের তাণ্ডব শুরু হয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বদলে যায় পরিস্থিতি। স্থানীয়দের দাবি, এমন ঝড় আসল। আমরা বুঝতে পারিনি, আগে তো অনেক ঝড় হয়েছে। কিন্তু মাথার ছাদও চলে গিয়েছে। আমাদের গ্রামের অর্ধেকটা শেষ। সব লন্ডভন্ড হয়ে গেছে।
জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের সেন পাড়া এলাকার দুই বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে এই ঘটনায়। তার মধ্য়ে একজনের ম়ৃত্যু হয়েছে গাছে চাপা পড়ে। এছাড়াও ময়নাগুড়ির বার্নিশে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
সেখানে যান শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব। ময়নাগুড়ির ব্লকের বার্নিশ এলাকায় প্রচুর বাড়ির পাশাপাশি গাছও ভেঙে পড়ে। গাছ পড়ে ক্ষতি হয় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা যানবাহনের। ঝড়ব়ৃষ্টি হয় আলিপুরদুয়ারের জটেশ্বরেও। ঝড়ের দাপট কমতেই শুরু করা হয় উদ্ধারকাজ।