কলকাতা: ভারী বৃষ্টিতে ভয়ঙ্কর বিপর্যয় উত্তরবঙ্গে। আগামী কালই সেখানে পৌঁছচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থও সেখানে পৌঁছবেন। বন্যা বিধ্বস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শন করবেন মমতা। উত্তরবঙ্গের জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকও করবেন তিনি। উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে শোকবার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। (North Bengal Situation)

Continues below advertisement

বিপর্যয়ের পূর্বাভাস ছিল আগে থেকেই। কিন্তু এত ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি আঁচ করা যায়নি। এক রাতের ভারী বৃষ্টিতেই তছনছ হয়ে গিয়েছে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। শুধুমাত্র কোচবিহারেই ১৯০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জল ঢুকেছে ভুটানের দিক থেকে, সেই সঙ্গে গজোলডোবা ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ায় পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকা, মহানন্দা, সব নদীর জল বিপদসীমা ছাড়িয়েছে। ধস নেমেছে জায়গায় জায়গায়। (Mamata Banerjee)

এখনও পর্যন্ত শিশু-সহ ১০ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এখনও অনেকে ধসে চাপা পড়ে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা। রাজ্য এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকার্য শুরু করে দিয়েছে। তবে বৃষ্টিতে উদ্ধারকার্য ব্যহত হচ্ছে। সেই আবহে সোমবারই উত্তরবঙ্গ যাচ্ছেন মমতা। পরিস্থিতি ঘুরে দেখবেন তিনি। এদিন দীর্ঘ লেখাও পোস্ট করেছেন মমতা। (Narendra Modi)

Continues below advertisement

সোশ্যাল মিডিয়ায় এদিন মমতা লেখেন, 'আমি অত্যন্ত চিন্তিত এবং উদ্বিগ্ন। গতরাতে মাত্র কয়েক ঘণ্টাক ভারী বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু এলাকা বানভাসি, সেই সঙ্গে বাইরে থেকে অতিরিক্ত জল ঢুকেছে নদীতে। ১২ ঘণ্টায় ৩০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে উত্তরবঙ্গে। ভুচান এবং সিকিম থেকে অতিরিক্ত জল এসে পড়েছে সঙ্কোশ নদীতে। এর ফলে বিপর্যয় নেমে এসেছে। এই বৃষ্টি এবং বন্যায় কিছু ভাইবোন প্রাণ হারিয়েছেন জেনে আমরা স্তম্ভিত, যন্ত্রণাবিদ্ধ'।

মমতা জানিয়েছেন, গতকাল রাত থেকে লাগাতার পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছেন তিনি। মুখ্যসচিব, ডিজি, উত্তরবঙ্গের জেলাশাসক, এসপি-দের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। বৈঠকে ছিলেন গৌতম দেব, অনীত থাপারাও। আপাতত পর্টকদের নিরাপদে থাকতে আর্জি জানিয়েছেন মমতা। পুলিশ গিয়ে উদ্ধার না করা পর্যন্ত বেরোতে বারণ করেছেন। খরচ-খরচা নিয়ে ভাবতে হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

এই বিপর্যয়ের মধ্যে বেশ কিছু আপদকালীন ও হেল্পলাইন নম্বর প্রকাশ করেছেন মমতা। রাজ্যের সদর দফতর এবং জেলা দফতর গুলি ২৪ ঘণ্টা খোলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন। নবান্নের বিপর্যয় মোকাবিলা কন্ট্রোল রুমের নম্বর ৯১৩৩ ২২১৪ ৩৫২৬, ৯১২২ ২২৫৩ ৫১৮৫। টোল ফ্রি নম্বর ৯১ ৮৬৯৭৯ ৮১০৭০ এবং ১০৭০-ও প্রকাশ করেছেন মমতা।  

 
অন্য দিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রধানমন্ত্রী মোদি লেখেন, 'দার্জিলিংয়ে সেতু দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় গভীরভাবে মর্মাহত। যাঁরা তাঁদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি গভীর সমবেদনা। আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন—এই কামনা করি। প্রবল বৃষ্টিপাত ও ভূমিধসের ঘটনায় দার্জিলিং ও আশেপাশের এলাকার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সমস্ত সম্ভাব্য সহায়তা প্রদান করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ'।