রাজা চট্টোপাধ্যায়, কালিম্পং : বাড়ির বাইরে একবার বের হলেই জামা-কাপড় একেবারে ভিজে যাচ্ছে। অস্বস্তি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে মানুষ বেশিক্ষণ বাইরে থাকতেই পারছেন না। তাড়াতাড়ি গন্তব্যে পৌঁছে যেতে মরিয়া হয়ে উঠছেন মানুষ। কার্যত 'হাঁসফাঁস' অবস্থা দক্ষিণবঙ্গে। একদিকে শেষ জৈষ্ঠ্যে যখন গরমে পুড়ছে দক্ষিণবঙ্গ, প্রবল বৃষ্টিতে তখন ভাসছে উত্তরবঙ্গ। ঠিক যেন উলটপুরাণ !
মঙ্গলবার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এদিকে, জল বেড়ে চলায় ফুঁসছে তিস্তা। কালিম্পঙের কালীঝোরা থেকে তিস্তাবাজার যাওয়ার পথে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের একাধিক জায়গায় ধস নেমেছে। রাস্তায় ভারী যান চলাচল বন্ধ। রাস্তার একাধিক জায়গায় ফাটল ধরেছে। রাস্তা মেরামতির কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। শিলিগুড়ি থেকে ঘুরপথে করোনেশন সেতু হয়ে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে ডুয়ার্স, গরুবাথান, লাভা, লোলেগাঁওয়ের রাস্তা দিয়ে সিকিমে গাড়ি যাতায়াত করছে। সিকিমেও ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে, 'সিঁদুরে মেঘ' দেখছেন পাহাড়বাসী।
ফি বছরই এই সময় পর্যটকের ঢল নামে উত্তরবঙ্গে। সেইমতোই এই মুহূর্তে সিকিমে কয়েক হাজার পর্যটক রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে কিছুক্ষণ আগে একটি নোটিফিকেশন জারি করেছে সিকিম সরকার। সিকিমে আটকে রয়েছেন বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড ও নেপালের বহু পর্যটক। সিকিমে লাগাতার তিনদিন ধরে বৃষ্টিতে বিপর্যয় নেমে এসেছে। একটি সেতুর মারাত্মক ক্ষতি হয়। ফলে, পর্যটকরা নীচে নামতে পারছেন না। প্রশাসনের তরফে আজ জানানো হয়েছে,.সেই সেতু সারানোর কাজ চলছে। রাস্তা সারাইয়ের কাজ চলছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই রাস্তা খোলার চেষ্টা করবে সিকিম সরকার। তারপরই সমস্ত পর্যটককে নীচে নামিয়ে নিয়ে আসা হবে।
এদিকে তিস্তা বাজার এলাকায় একাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনও বিভিন্ন বাড়িতে জম জমে রয়েছে। পলিমাটি জমে রয়েছে। চারিদিকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন ছবি। প্রচুর গাড়ি, বাইক পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এখনও চিন্তা কাটেনি তিস্তা বাজার এলাকার মানুষের।
দুর্যোগের আবহেই রবিবারেও আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলায় অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি চলতে থাকবে। দার্জিলিং ও কালিম্পঙের পার্বত্য এলাকায় ভারী বৃষ্টির সঙ্গে দমকা ঝোড়ো বাতাসের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সঙ্গে দমকা ঝোড়ো বাতাস বইবে মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে। সোমবার থেকে বুধবার দার্জিলিং , কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি জেলায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। ৭০ থেকে ১১০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। মালদা এবং দুই দিনাজপুরে ও বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস।