নয়াদিল্লি: গোড়ার দিকে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করলেও, নতুন করে NEET নিতে সম্মত হয়েছে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি। দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করলেও, বিভিন্ন রাজ্যে গ্রেফতারি শুরু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একযোগে সরব হল বিরোধী দলগুলি। বিহার, গুজরাতের মতো রাজ্যে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের হদিশ মিলেছে যেখানে, গোটা ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে তারা। (NEET Controversy)


ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা NEET-এ অনিয়ম এবং দুর্নীতির ভূরি ভূরি অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখতে গিয়ে ইতিমধ্যেই অর্থনৈতিক লেনদেনের হদিশ পেয়েছে বিহারের অর্থনৈতিক অপরাধ বিভাগ। ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র হাতে পেতে পড়ুয়ারা ৩০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা করে দিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই জেরায় ধৃতরা তা কবুল করে নিয়েছেন বলে খবর। বিহার অর্থনৈতিক অপরাধ বিভাগের তরফে শনিবার ন'জন পরীক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস পাঠানো হয়েছে। (NEET Row 2024)


একই ভাবে গুজরাতের গোধরায় বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেখানে ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন একটি কোচিং সেন্টারের প্রধানও। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কোচিং সেন্টারের প্রধান, কয়েক জন শিক্ষক-শিক্ষিকা, কিছু পড়ুয়া এবং তাঁদের অভিভাবক মিলে NEET-এ অনিয়ম করেছেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ১২ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলে খবর। 


আরও পড়ুন: Maharaj Film Controversy: ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে যৌন উৎপীড়নের মামলা, উত্তাল হয়েছিল পরাধীন ভারত, বিতর্কে আমিরের ছেলের ছবিও


গুজরাত পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২ মে গোধরার জয় জলরাম স্কুলে NEET নেওয়া হয়। সেখানে আগে থেকেই 'সেটিং' হয়েছিল। মোটা টাকা দেওয়া পড়ুয়াদের বলা হয়, যে যে প্রশ্নের উত্তর জানেন না, তা ছেড়ে আসতে। পরে পাতায় তা লিখে দেওয়া হবে।  এই ঘটনায় শিক্ষা বিষয়ক পরামর্শদাতা বিভোর আনন্দ, স্কুলের অধ্যক্ষ পুরুষোত্তম শর্মা, NEET পরীক্ষায় ওই স্কুলে ডেপুটি সুপার হিসেবে মোতায়েন তুষার ভট্টকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভাদোদরার অভিবাসী এজেন্সির মালিক পরশুরাম রায়কেও গ্রেফতার করা হয়েছে। 


গোধরা পুলিশ তদন্তে নেমে বেশ কিছু তথ্য হাতে পেয়েছে। চার পড়ুয়া মিলে ওই কোচিং সেন্টারকে মাথাপিছু ৬৬ লক্ষ টাকা করে দিয়েছিলেন এবং তিন জন ব্ল্যাঙ্ক চেক লিখে দেন বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ। পরশুরাম এবং আরিফ বোহরা নামের একজন ২.৮২ কোটি টাকা পড়ুয়াদের থেকে আয় করেন বলে জানা গিয়েছে।


এত তথ্য হাতে আসা সত্ত্বেও কেন্দ্র কেন নিশ্চুপ প্রশ্ন তুলছে বিরোধী দলগুলি। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের দাবি, শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এবং NTA-র মাধ্যমে NEET দুর্নীতিকে ধামাচাপা দিতে চাইছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। খড়্গে বলেন, "সত্যিই যদি দুর্নীতি না হয়ে থাকে, তাহলে প্রশ্নফাঁসের জন্য বিহারে ১৩ জন গ্রেফতার হলেন কেন? পটনা পুলিশের অর্থনৈতিক অপরাধ দমন শাখা ৩০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা করে শিক্ষা মাফিয়ার হাতে তুলে দেওয়ার খোঁজ পেয়েছে কি না? গুজরাতের গোধরায় NEET ব়্যাকেটের হদিশ কি মেলেনি?  ১২ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে সেখানে।" 


মোদি সরকার দেশের ২৪ লক্ষ তরুণ-তরুণীর স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন খড়্গে। তিনি জানিয়েছেন, ২৪ লক্ষ পড়ুয়া NEET-এ বসেন। ডাক্তার হওয়ার জন্য, মেডিক্যাল কলেজে সিট পাওয়ার জন্য় দিনরাত এক করে পরিশ্রম করেন তাঁরা। ১ লক্ষ আসনের মধ্যে ৫৫ হাজার সরকারি কলেজের, যার মধ্যে আবার তফসিলি জাতি, উপজাতি, অন্য়ান্য অনগ্রসর শ্রেণি, অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বলদের জন্য সংরক্ষণ রয়েছে। মোদি সরকার NTA-র অপব্যবহার করছে বলেও দাবি করেন খড়্গে। 


NEET-এর অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগকে ব্যাপম ২.০ বলে উল্লেখ করেন কংগ্রেসের পবন খেরা। এবারে যাঁরা NEET দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৬৭ জন শীর্ষস্থান অধিকার করেছেন। শীর্ষ স্থানাধিকারীদের অনেকে এক রাজ্যেরই নন শুধু, তাঁদের রোল নম্বরও প্রায় এক বলে দাবি করেন পবন। একই পরীক্ষাকেন্দ্রেও অনেকে বসেছিলেন বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। ১০ দিন আগে কেন NEET-এর ফলাফল প্রকাশ করা হল, প্রশ্ন তুলেছেন পবন। সংসদের অধিবেশনে এ নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিরোধীরা।


Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI