সুদীপ চক্রবর্তী, রায়গঞ্জ : মালবাজারে বিসর্জনে বিপর্যয়ের পরেও ফেরেনি হুঁশ। এবার উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে পুজো কার্নিভালে বড়সর দুর্ঘটনা।


 বলদের পদাঘাত
উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে পুজো কার্নিভালে গরুর গাড়ি ছেড়ে হঠাৎ ছুটতে শুরু করে এক উন্মত্ত বলদ। চারিদিকে আতঙ্কে শোরগোল পড়ে যায়। ভিড়ের মধ্যেই যে যেদিকে পারে পালাতে শুরু করে। কিন্তু রেহাই মেলেনি সকলের। উন্মত্ত বলদের পদাঘাতে কার্যত ছিটকে পড়লেন এক ব্যক্তি। যন্ত্রণায় কুঁকড়ে গিয়ে কাতরাতে শুরু করেন তিনি। এরপর গুঁতোয় জখম হওয়া আরেক ব্যক্তির মৃত্যু হয়।

গাড়ি থেকে পড়ে যায় প্রতিমা
স্থানীয় সূত্রে খবর, গরুর গাড়ি নিয়ে শোভাযাত্রা চলাকালীন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে একটি বলদ। দড়ি ছিঁড়ে বেরিয়ে, এলোপাথাড়ি ছুটোছুটি শুরু করে। তার শিংয়ের গুঁতোয় অনেকে আহত হন। গাড়ি থেকে পড়ে যায় প্রতিমা। আহতদের রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর, রাতে সাধন কর্মকার নামে বছর পঁয়ষট্টির এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। পুজো কার্নিভালে অংশ নিতে এসেছিলেন ওই ব্যক্তি। মালবাজারের ঘটনার পরেও কার্নিভাল নিয়ে কেন সতর্ক হল না প্রশাসন, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

জানা গিয়েছে, সাধারণ মানুষ সেলফি তুলছিল। প্রণামও করতে যায় কেউ কেউ, তার জেরেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে বলদ, দাবি ক্লাব কর্তৃপক্ষের। মালবাজারে বিসর্জন-বিপর্যয়ের পরেও কার্নিভাল নিয়ে কেন সতর্ক হল না প্রশাসন, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। 


প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায় , ' দেখলাম সবাই দাঁড়িয়ে পড়েছে। হঠাৎ করে বলছে গরু গরু আসছে। সেই গরু উর্ধ্বশ্বাসে দৌড়, পরে শুনলাম এটা অনুশীলনী ক্লাবের গরু ছিল। যে যেভাবে পারছে, নিজের প্রাণ বাঁচাতে ছুটছে। একটা গরু চলে গেল। আরেকটি গরু সেই ভাবে দৌড় মারছে। ' 

মৃত ব্যক্তির মেয়ে কথায় , ' সামান্য একটা অনুষ্ঠানের জন্য আজকে একটা প্রাণ চলে গেল, এই প্রাণ তো আর ফিরে পাব না। আমি তো আর আমার বাবাকে ফিরে পাব না। এটার জন্য কে দায়ী? এটার জন্য দায়ী ক্লাব, দায়ী প্রশাসন। ' 
মাল নদীতে হড়পা বান
দশমীর দিন প্রতিমা বিসর্জনের সময় হঠাৎই জলপাইগুড়ির মালবাজারের মাল নদীতে হড়পা বান আসে। জলের তোড়ে ভেসে গিয়ে  ৮ জনের মৃত্যু হয়। সকালে নদীর বিভিন্ন অংশে তল্লাশি শুরু হয়। তল্লাশি অভিযানে নামে এনডিআরএফ। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এই ভয়ঙ্কর ঘটনা।


মালবাজারে মৃতদের পরিবারপিছু ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আহতদের দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য। একই হারে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছে প্রধানমন্ত্রীর দফতরও।  দুর্ঘটনার পর কেউ নিখোঁজ নেই, দাবি মুখ্যমন্ত্রীর।