সুদীপ চক্রবর্তী, রায়গঞ্জ (উত্তর দিনাজপুর) : সরকারকে ধান বিক্রি করেও লাভের লাভ হচ্ছে না। অভিযোগ, রায়গঞ্জ ব্লকের কৃষকদের একাংশের। তাঁদের দাবি, সরকারি মাণ্ডিতে বিক্রি করলেও ১ কুইন্ট্যাল ধান দিলে ৯২ বা ৯৩ কেজির দাম দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি জানা নেই বলে দাবি, জেলা তৃণমূল সভাপতির। ধান কেনার নামে কাটমানি নিচ্ছে সরকার। অভিযোগ বিজেপির। 


ফড়েরাজ শেষ করতে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার ব্যবস্থা রয়েছে সরকারের। বাজারের চেয়ে বেশি দাম পাওয়ায় সরকারকে ধান বেচতে উৎসাহী হন কৃষকরাও। কিন্তু উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ব্লকের কৃষকদের একাংশের অভিযোগ, স্থানীয় উদয়পুর মাণ্ডিতে ধানের পুরো দাম মিলছে না। ফলে বাজারের বদলে সরকারকে বিক্রি করেও লাভ হচ্ছে না।


কৃষকদের অভিযোগ, প্রতি কুইন্ট্যালে ৭-৮ কেজি ধান বেশি নেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ ১০০ কেজি ধান বিক্রি করলে ৯২ বা ৯৩ কেজি ধানের দাম দেওয়া হচ্ছে। এই বাড়তি ধান নেওয়ার পদ্ধতিকে স্থানীয় ভাষায় ধলতা বলে। 


রায়গঞ্জ ব্লকের ধানচাষি সুজিত সরকার বলেন, ধলতায় কেটে নেওয়ায় দাম পাচ্ছি না, তাহলে বাজারে বিক্রি না করে সরকারকে করে আলাদা করে লাভ কী হল।


কৃষকদের অভিযোগ, নভেম্বরের ১ তারিখ থেকে ধান কেনার কথা থাকলেও তা শুরু হয়েছে ২৬ তারিখ। রায়গঞ্জ ব্লকের ধানচাষি মকবুল সরকার বলেন, আমরা গরিব, একে তো ২৫ দিন পর টাকা পাচ্ছি, তার ওপর ধলতায় টাকা কেটে নিচ্ছে। ধান বেচে অন্য ফসল লাগাই, সরকার সুবিধা দিলেও সেই সুবিধা পাচ্ছি না। সরকার নির্ধারিত থেকে কম ধান নেওয়া হচ্ছে।


সরকারি কিষাণমাণ্ডিতে ধান বিক্রিতে কম টাকা পাওয়ার অভিযোগে তৃণমূলকে একহাত নিয়েছে বিজেপি। যদিও বিষয়টি জানা নেই বলে দাবি, জেলা তৃণমূল সভাপতির। 


উত্তর দিনাজপুর বিজেপির সভাপতি বাসুদেব সরকার বলেন, ভোটের আগে তৃনমূল যে খেলা হবে বলেছিল এটা তারই নমুনা। কৃষকদের কাছ থেকে বাড়তি ধান নিয়ে তৃনমূল নেতা ও একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর পকেট ভরানো হচ্ছে। ধান কেনার নাম করে কাটমানি নিচ্ছে সরকার।  


যদিও উত্তর দিনাজপুর তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, কিছু জানা নেই। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তিনি দেখবেন।


অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন জেলার খাদ্য ও খাদ্য সরবরাহ দফতরের আধিকারিক। উত্তর দিনাজপুরের খাদ্য ও খাদ্য সরবরাহ দফতরের আধিকারিক সুব্রত নন্দী বলেন, ধানের গুনাগুন বিচারের জন্য কৃষক ও রাইস মিলের মালিকদের নিয়ে একটি কমিটি গঠিত হয়েছে। তারাই কিষানমান্ডিতে ধানের গুনাগুন দেখে ধান ক্রয় করছে। যদি একেবারে নিম্নমানের ধান থাকে সেক্ষেত্রে ধলতা নেওয়া হতে পারে। এমনিতে ধলতা নেওয়ার ব্যাপার নেই।


রাজনীতি চলছেই। কৃষকরা শুধু চাইছেন, ন্যায্য দামে কেনা হোক তাঁদের কষ্টার্জিত ফসল।