কলকাতা: কামড়কাণ্ডে জাতীয় মহিলা কমিশনের দ্বারস্থ অরুণিমা পাল। রাজ্য মহিলা কমিশনের রিপোর্টে সন্তুষ্ট নন আক্রান্ত চাকরিপ্রার্থী। গতবছর ৯ নভেম্বর পুলিশের কামড় খেয়েছিলেন অরুণিমা পাল। এক্সাইড মোড় থেকে ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেকের অফিসের সামনে চলে আসেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের টেনে-হিঁচড়ে সরিয়ে দেয় পুলিশ, তখনই অরুণিমার হাত কামড়ে ধরেন এক মহিলা কনস্টেবল।
রাজ্য মহিলা কমিশনের রিপোর্টের সন্তুষ্ট নন অরুণিমা পাল। প্রতিবাদে তিনি দ্বারস্ত হয়েছেন জাতীয় মহিলা কমিশনের। এনিয়ে কলকাতা পুলিশের কমিশনারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে NCW। যে বিষয়ে রিপোর্ট চাওয়া হবে সেই অনুযায়ী সদুত্তর দেওয়া হবে, জানিয়েছে লালবাজার।
চাকরি চাইতে আন্দোলনে নেমেছিলেন শহরের রাস্তায়...! আন্দোলন মোকাবিলায় নজিরবিহীন পুলিশি কীর্তির সাক্ষী হয়েছে কলকাতা! আন্দোলনকারী খেয়েছিলেন পুলিশের কামড়! খেতে হয়েছিল পুলিশের ঘুষিও। সেই ঘটনায় রাজ্য মহিলা কমিশনের রিপোর্টে সন্তুষ্ট নন আক্রান্ত চাকরিপ্রার্থী অরুণিমা পাল।
ঠিক কী ঘটেছিল গত বছরের ৯ নভেম্বর? এক্সাইড মোড় থেকে একদল চাকরিপ্রার্থী দৌড়তে দৌড়তে, ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসের সামনে চলে আসেন। তাদের টেনেহিঁচড়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ।
তখনই আচমকা দৌড়ে আন্দোলনকারীর অরুণিমার হাতে কামড়ে দেন কলকাতা পুলিশের মহিলা কনস্টেবল ইভা থাপা। যদিও পুলিশ দাবি করে, যে পুলিশকর্মী চাকরিপ্রার্থীর হাতে কামড়ে দিয়েছেন, তাঁর হাতেও কামড়ে দিয়েছেন ওই আন্দোলনকারী। শুধু তাই নয়, SSKM হাসপাতালে ভর্তিও করা হয় ওই পুলিশকর্মীকে।
অন্যদিকে, অশান্তি পাকানোর অভিযোগে অরুণিমা সহ ৩০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জামিন অযোগ্য ধারায় রুজু হয় মামলা। এমনকি, হেয়ার স্ট্রিট থানায় এক পুলিশ অফিসারের চরম অসংবেদনশীল আচরণের শিকার হতে হয় হলে অভিযোগ করেন আন্দোলকারীরা। শেষমেশ, আদালতে ধোপে টেকেনি পুলিশের যুক্তি। জামিন পান সবাই।
সেই ঘটনায় রাজ্য মহিলা কমিশন যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে সন্তুষ্ট নন বেলঘরিয়ার বাসিন্দা অরুণিমা। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ঘটনার জন্য অভিযুক্ত পুলিশকর্মী ইভা থাপাকে সেন্সর করা হয়। কাউন্সেলিং-এর পাশাপাশি, প্রশিক্ষকের পর্যবেক্ষণে ১৫ দিনের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হয়।
সাউথ ডিভিশনে কর্মরত ওই পুলিশকর্মী। এদিন দুপুরের পরে পৌনে তিনটে নাগাদ রবীন্দ্রসদন মেট্রো স্টেশন থেকে বেরোচ্ছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। তখন তাঁদের ধাওয়া করেন পুলিশকর্মীরা। এলগিন রোডের দিকে ছুটে গিয়ে রাস্তায় শুয়ে পড়েছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। একাধিক জায়গায় বলপ্রয়োগ করতে দেখা যায় পুলিশকে। চ্যাংদোলা করে তোলা হয় ভ্যানে। যাঁরা ভ্যানের নীচে ঢুকে গিয়েছিলেন, তাঁদের টেনেহিঁচড়ে বের করা হয়। এরপরেই আন্দোলনকারীদের একটি অংশ ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসের সামনে এসে জমায়েত করেন।
কী দেখা গিয়েছে?
ক্যামাক স্ট্রিটের সামনে বিক্ষোভে দেখা যায় ওই পুলিশকর্মী ছুটে যাচ্ছেন, দিয়ে সোজা এক মহিলার হাতে কামড় বসিয়ে দিতে দেখা যায়। তারপর তিনি সরে যেতেই ক্যামেরায় ধরা পড়ে চাকরিপ্রার্থী ওই মহিলার হাতে কামড়ের দাগ।
অভিযোগ অস্বীকার:
অভিযুক্ত পুলিশকর্মীর দাবি, তিনি কামড়াননি, আন্দোলনকারীকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
বলপ্রয়োগের ছবি:
কোথাও পুলিশ ভ্যানে তোলার সময় বাঁ হাত দিয়ে আন্দোলনকারীকে ঘুষি মারতে দেখা যায় এক পুলিশকর্মীকে। কোথাও আবার এক চাকরিপ্রার্থীর উপর আক্রমণাত্মক হতে দেখা যায় এক ব্যক্তিকে। আন্দোলনকারীদের দাবি তিনি পুলিশকর্মী।