নয়াদিল্লি: এখনও শতাধিক দেহ শনাক্ত করা যায়নি। মৃত্যুপুরীর চারিদিকে হাহাকার রব। চলছে রাজনৈতিক টানাপোড়েনও (Odisha Train Accident)। বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে চলছে কাটাছেঁড়া। সেই আবহেই, অভিশপ্ত করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুই পাইলটের খোঁজ মিলল। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের ওই চালক বেঁচে রয়েছেন বলে জানা গেল। আহত হয়েছেন তাঁরা। চিকিৎসা চলছে। তবে স্থিতিশীল রয়েছেন দু'জনেই ( Coromandel Express Loco Pilots)। 


দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক আদিত্যকুমার চৌধুরি দুই পাইলটের জীবিত থাকার খবরে সিলমোহর দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের লোকো পাইলট গুণনিধি মোহান্তি এবং তাঁর সহকারী লোকো পাইলট হাজারি বেহারা, দুর্ঘটনায় আহত হন। ভুবনেশ্বরে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁদের। তবে অবস্থা সঙ্কটজনক নয়। স্থিতিশীল রয়েছেন। 


লুপ লাইনে যে মালগাড়িতে ধাক্কা মারে করমণ্ডল এক্সপ্রেস, মালগাড়ির মাথায় উঠে যায়, সেই মালগাড়ির গার্ডের অবস্থাও স্থিতিশীল। কী করে দুর্ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালেই বাহানাগায় পৌঁছয় ১০ সদস্যের একটি দল। জিজ্ঞাসাবাদও শুরু হয়েছে। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের পাইলটদেরও বয়ান নেওয়া হবে বলে খবর। 


আরও পড়ুন: Odisha Train Accident: মর্গে শবের স্তূপে জীবন্ত ছেলে, হাওড়া থেকে গিয়ে ফিরিয়ে আনলেন বাবা


তবে ইতিমধ্যেই একদফা বয়ান দিয়েছেন করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুই চালক। গুণনিধি জানিয়েছেন, দুরন্ত গতিতে ট্রেন ছোটানো হচ্ছিল না। সিগনাল সবুজ দেখেই লুপ লািনে ট্রেন ঢোকানো হয়। সেখানে আগে থেকেই দাঁড়িয়েছিল মালগাড়িটি। রেলের তরফে ইতিমধ্যে দুই পাইলটকে ক্লিনচিটও দিয়ে দেওয়া হয়েছে। 


রেল বোর্ডে সদস্য জয়া বর্মা সিন্হা জানিয়েছেন, দুই পাইলটের সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁদের। সিগনাল সবুজই ছিল। রেলের কর্মীরা যথেষ্ট দায়িত্বশীল। সিগনাল লাল দেখে এগোননি একেবারেই। ট্রেনের গতিও বেশি ছিল না। দুই পাইলটই জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সময় সিগনাল সবুজ ছিল। 


রেলের তরফে জানানো হয়েছে, বন্ধ খামে দুই পাইলটের বয়ান রয়েছে। তদন্তে ব্যবহৃত হবে। তবে যে রেকর্ড তাদের হাতে রয়েছে, তাতে দুর্ঘটনার সময় সিগনাল সবুজ ছিল বলেই জানা গিয়েছে। ট্রেনের ইঞ্জিনে গতিবেগ মাপার যে যন্ত্র থাকে, তাতেও অস্বাভাবিক গতি ধরা পড়েনি। বরং অনুমোদিত গতিতেই ছুটছিল ট্রেন। যে রুটে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে উচ্চগতিতেই ট্রেন চলে। দুর্ঘটনার সময় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২৮ কিলোমিটার।


রেলের সুপারিশেই বালেশ্বর দুর্ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে CBI-কে। তবে GRP ইতিমধ্যেই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৩৭, ৩৩৮, ৩০৪-ও এবং ৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করেছে। এ ছাড়াও ১৯৮৯ সালের রেল আইনে ১৫৩, ১৫৪ এবং ১৭৫ ধারায় দায়ের  হয়েছে  FIR. বালেশ্বরের GRP সাব ইন্সপেক্টর পাপ্পুকুমার নায়েকের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে, যাতে রেলের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগও রয়েছে।