পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: চতুর্থীর দিন সন্ধে থেকে টানা সিবিআই জিজ্ঞাবাদের মুখোমুখি হলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি। হাইকোর্টের নির্দেশে নির্ধারিত সময়ের আগেই সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দিয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল। তারপরে প্রায় ৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ১১টা নাগাদ সিবিআই অফিস থেকে বেরোলেন পর্ষদ সভাপতি।


আদালতের নির্দেশের পরে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ সিবিআইয়ের। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতির পাশাপাশি, ডেপুটি সেক্রেটারি ও এক কর্মীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ওএমআর কারচুপি মামলায় সিবিআই এদিন জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। 


কী বললেন  প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি?
এদিন জিজ্ঞাসাবাদের পরে সিবিআই অফিস থেকে বেরিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল বলেন, 'হাইকোর্ট আসতে বলেছিল, যা জানতে চেয়েছিল, বলেছি।'


এদিনই প্রাথমিকে ওএমআর কারচুপি মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতিকে নিজাম প্যালেসে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি। সন্ধে ৬টার মধ্যে বর্তমান পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালকে সিবিআইয়ের মুখোমুখি হতে নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। তারপরে ৬টা বাজার কিছু আগেই সিবিআই অফিসে চলে যান তিনি। 


সিবিআইয়ের রিপোর্ট পড়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় মন্তব্য করেছেন যে, 'মানিক ভট্টাচার্যের সম্পূর্ণ সজ্ঞানেই গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম হয়েছে। সিবিআই রিপোর্টে তা জলের মতো স্পষ্ট।' তার সঙ্গেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, 'সিবিআই রিপোর্ট দেখে বোঝা যাচ্ছে বোর্ড কেন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে ওএমআর মামলার বিচারপ্রক্রিয়া কেন স্থগিত করতে চেয়েছে তা স্পষ্ট।' নির্দেশনামায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, 'ওএমআর স্ক্যানিংয়ের সময় কোনও বোর্ড সদস্য উপস্থিত ছিলেন না। ওএমআর ডিজিটাইজেশনেও বোর্ডের কোনও নজরদারি ছিল না। ওএমআর স্ক্যানের নামে প্রিন্ট করা হয়েছে, সেটাই ডিজিটাইজড ওএমআর কপি বলা হয়েছে।'


সম্প্রতি ওএমআর শিট মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল পার্থ সেনকে। পার্থ সেন এস বসুরায় কোম্পানিতে প্রোগ্রামিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন। ওএমআর শিট বিকৃতিকাণ্ডে অভিযুক্ত ছিলেন তিনি। দক্ষিণ কলকাতার সংস্থা এস বসু রায় অ্য়ান্ড কোম্পানি। প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির মামলাতে ইতিমধ্যেই আতসকাচের তলায় এসেছে এই সংস্থা। গত মাসে এই সংস্থার পার্টনার কৌশিক মাজিকে নিজাম প্যালেসে (Nizam Palace) জিজ্ঞাসাবাদ করে CBI। CBI সূত্রে দাবি করা হয়, তাঁর থেকে মূলত যে বিষয়গুলি জানতে চাওয়া হয়েছে, তা হল কার মাধ্যমে তাঁদের সংস্থাকে OMR শিট মূল্যায়নের বরাত দিয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ? কী কী চুক্তি হয়েছিল ? প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি ও তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যর সঙ্গে কতবার বৈঠক হয়েছিল ? তিনি কী কী নির্দেশ দিতেন ? বিশেষ সুবিধা দেওয়ার জন্য, নির্দিষ্ট কোনও চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা কি পাঠানো হয়েছিল ? OMR শিট মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কেউ কোনও প্রভাব খাটাতেন ? ফোন বা মেসেজের মাধ্যমে বিশেষ কোনও বার্তা দেওয়া হত ?


আরও পড়ুন: বাইক থামিয়ে এলোপাথাড়ি কোপ যুবককে! গ্রেফতার ১