কলকাতা: ২ ছেলের বিয়ের জন্য অন্তর্বর্তী জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন ছত্রধর মাহাতো (Chhatradhar Mahato)। অন্তর্বর্তী জামিনের (Interim bail) শেষ দিনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লেন তিনি। কাল বিশেষ আদালতে হাজিরার জন্য কলকাতায় আসার কথা ছিল ছত্রধরের। হাজিরার আগের দিন হঠাৎ অসুস্থ তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। অসুস্থ বোধ করায় ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ছত্রধরকে। রাজধানী এক্সপ্রেস-মামলায় রাষ্ট্রদ্রোহিতায় ছত্রধরকে গ্রেফতার করেছিল এনআইএ (NIA)।
বৃহস্পতিবার বিকেলে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন ছত্রধর মাহাতো (Chhatradhar Mahato) । প্রথমে তাঁকে ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে (Jhargram Hospital) ভর্তি করা হয়। তাঁর শ্বাসকষ্ট ছিল। পরিবার সূত্রে খবর, গতকাল রাত থেকে অসুস্থ বোধ করায় আজ সকালে লালগড় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ছত্রধরকে। সেখানে ভর্তি হতে চাইলে তাঁকে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তির কথা জানান ডাক্তাররা। বাড়ি ফিরে ফের অসুস্থ বোধ করায় তাঁকে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বোর্ড বসিয়ে চিকিৎসা: সূত্রের খবর, হাসপাতাল সূত্রে বোর্ড বসিয়ে চিকিৎসার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ছত্রধর মাহাতোকে রাজধানী আটকের মামলায় শর্তাধীন অন্তর্বতীকালিন জামিনের আদেশ দিয়েছে এনআইএ বিশেষ আদালত। দুই ছেলে দেবীপ্রসাদ ও ধৃতিপ্রসাদ মাহাতোর বিয়ে যথাক্রমে ৩ এবং ৫ জুলাই। প্রীতিভোজের অনুষ্ঠান জুলাই।
এই কারণেই শর্তসাপেক্ষে জামিন দেওয়া হয়েছিল ছত্রধরকে। ২ জুলাই থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত ছিল সময়সীমা। আগামিকাল অর্থাৎ ৮ জুলাই বিশেষ আদালতে ছত্রধরের হাজিরা দেওয়ার কথা। আর তার আগেই অসুস্থ হয়ে পড়লেন ছত্রধর। এ প্রসঙ্গে বিজেপির মন্তব্য, 'সবই মিথ্যে,জেল এড়ানোর জন্যই এ সমস্ত করছেম ছত্রধর মাহাতো'।
আরও পড়ুন: ABP ANANDA EXCLUSIVE: পোস্টার-বিতর্ক নিয়ে কী বলছেন মহুয়া মৈত্র? এবিপি আনন্দকে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার
ছত্রধরের বিরুদ্ধে চার্জশিট: গত জানুয়ারিতে লালগড়ে সিপিএম নেতা খুনে ফের ছত্রধর মাহাতোর (Chhatradhar Mahato) বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (NIA)। গোয়েন্দাদের অভিযোগ, ২০০৯ সালে ঝাড়গ্রামের সিপিএম (CPM) নেতা প্রবীর মাহাতোর (Prabir Mahato) খুনের পরিকল্পনা ছত্রধরেরই। চার্জশিটে ছত্রধর মাহাতো-সহ ১৭ জনের নাম রয়েছে। ১০০ পাতার চার্জশিটে বলা হয়েছে, খুনের ষড়যন্ত্র করেছিলেন ছত্রধর। তাঁর নির্দেশেই মাওবাদীরা খুন করেন সিপিএম নেতাকে।
২০০৯ সালের ১৪ জুন বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে প্রবীরকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। রাজ্য পুলিশে হাত থেকে সেই মামলার তদন্তের ভার ওঠে এনআইএ-এর হাতে। এত দিন পর, বৃহস্পতিবার নগর দায়রা আদালতে চার্জশিট জমা দিল তারা। আর তাতে অধুনা তৃণমূল ছত্রধরকেই মূল ষড়যন্ত্রকারী বলা হয়েছে। ছত্রধর-সহ অভিযুক্ত সকলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা এবং বেআইনি কার্যকলাপ বিরোধী আইন (UAPA) এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৩, ৩৬৪, ৪৪৯, ৪৫০ এবং ১২০-র বি ধারায় মামলা দায়ের করেছে এনআইএ।