নয়াদিল্লি: পহেলগাঁও হামলার দিন কোথায় ছিল BSF ও CISF ? প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এদিন তীব্র আক্রমণ করেন কল্যাণ বন্দ্য়োপাধ্যায়। পাশাপাশি ট্রাম্পের সংঘর্ষ বিরতি ঘোষণার ইস্যুতে মোদিকে জোর কটাক্ষ তৃণমূল সাংসদের।
এদিন তিনি বলেন, হাত জোড় করে ক্ষমা চান আপনাদের অবহেলার জন্য ২৬ জন লোক মারা গিয়েছে। একটা জঙ্গি ধরতে পারেন না আপনারা। ১০০ জঙ্গি মেরেছে। আরে ১০০ জন জঙ্গির মধ্যে ওই ৪ টে জঙ্গি (পহেলগাঁও হামলাকারী) কোথায় গেল ? তার নাম বলুন না। বক্তৃতা শুধু দিয়েই গেলে হবে ? এই ২৬ দিনে আমাদের ইন্টেলিজেন্স ডিপার্টমেন্ট কী করছিল ? অজিত ডোভাল কী করছিলেন ? প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, একটা ব্যর্থ ইন্টিলিজেন্স অফিসার। তারপরেও 'কেন এখনও পর্যন্ত লোকটাকে রাখা হয়েছে?', নিশানা কল্যাণের।
এদিন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্য়োপাধ্যায় বলেন, আপনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি বলেছিলেন, ২০১৪ সাল থেকে শুনে আসছি যে আপনি পাহারাদার। ভারতবর্ষের পাহারাদার আপনি। উনি একটি পাহারাদার, যে চারজন জঙ্গি ঢুকল, ২৬ জনকে গুলি করে মেরে দিয়ে বাইরে বেরিয়ে চলে গেল, বাহ বাহ কী পাহারাদার আমার.. ', তীব্র কটাক্ষ কল্যাণের। এরপরেই তিনি বিস্ফোরক দাবি তুলে বলেন, আর পাহারা দেবেন না, দয়া করে আপনাকে বলছি, আপনি যান এবার। পাহারা দেবার দরকার নেই। আপনার মতো পাহারাদার থাকলে, আরও ভারতীয়র মৃত্যু হবে। আপনার অভ্যেষ দেশের সব কৃতিত্ব আপনি নিয়ে নেবেন। .. অপারেশন সিঁদুরে লড়ল কারা ? ভারতীয় সেনাবাহিনী। কৃতিত্ব কার ? নরেন্দ্র মোদির। বাহ এতো অদ্ভুত ব্যাপার।'
তিনি বলেন, ' ভারতীয় সেনাবাহিনী ৬ মে গভীর রাতে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে, ৯ টি জঙ্গি ঘাঁটিতে এয়ার স্ট্রাইক চালায়।...আমাদের অনেক শুভেচ্ছা ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য রইল। ..পাকিস্তান আমাদের জম্মু-কাশ্মীর পাঞ্জাব সহ বিভিন্ন অসামরিক এলাকাগুলিতেও আঘাত এনেছিল। সেই আঘাত কিন্তু মানুষ দেখেছে। ঘটনাচক্রে কিছুদিন পরে আমি জম্মুতে গিয়েছিলাম। ..মানুষ তখনও সন্ত্রাসের মধ্যে রয়েছে। এত আঘাত হয়েছে। এটা অস্বীকার করা যায় না। যেগুলি সত্য , সেগুলি স্বীকার করুন। এমন কি পাকিস্তান দাবি করছে, সেসময় ৬ টি ভারতীয় যুদ্ধ বিমানকে গুলি করে তাঁরা নামিয়েছে। আমি এই কথার সত্যতার এখনও কোনও প্রমাণ পাইনি। আমরা সর্ব ভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস, বিদেশ নীতিতে সবসময় ভারত সরকারের সঙ্গে রয়েছি। আমরা বলি, তাঁরা যা করবেন, আমাদের সম্মতি রয়েছে। কিন্তু আপনাদের যদি deficiency থাকে, আপনাদের যদি গলদ থাকে, সেই গলদ নিঃসন্দেহে আমরা বলব।'
এরপরেই একটি বড় ইস্যুতে তোপ দাগেন কল্যাণ। বলেন, ১০ মে, আমি সেদিন কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করছিলাম, সারাদিন। মাঝেমাঝে এসেই নিউজ দেখছি। উজ্জীবিত। ..গোটা ভারতবর্ষের মানুষ বলছে, এইবারে সুযোগ পাকিস্তানে গুড়িয়ে উড়িয়ে দে। আমরাও সবই আছে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। সবাই তো বলেছি। সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, যে আজ কালের মধ্যে পাকিস্তানের পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে আমরা দখল করে নিয়ে আসব। হঠাৎ সাড়ে তিনটের সময় শুনলাম, সংঘর্ষ বিরতি। কখনও শুনেছেন, নব্বই রান হয়ে গেছে, সেঞ্চুরির মুখে, ইনিংস ডিক্লিয়ার করে দিয়ে বলল আমি আর খেলব না। পিছনে যাচ্ছি। কখনও শুনেছেন ? মোদিজি আপনি দয়া করে ক্রিকেট ম্যাচে ঢুকবেন না। ১০০ রান হবার কথা ছিল। ৯০ রান হল। আমরা লজ্জিত। লজ্জায় আমাদের মাথা কাটা গেছে। ..যেখানে আমরা সবাই রয়েছে, ১৪০ কোটি ভারতীয় বলছে, লড়াই করুন। আর আমেরিকাপ প্রেসিডেন্টের কথা শুনে আপনি যুদ্ধ বন্ধ করে দিলেন ? কী হয় বলুন তো আপনার, এই আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সামনে দাড়ালে, হাইটটা নেমে ৫ ফুট হয়ে যায় ?! আর চেস্টটা হয়ে যায় ৫৬ ইঞ্চি থেকে ৩৬ ইঞ্চি !