মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌরভ বন্দ্যোপাধ্য়ায় : ফেব্রুয়ারির শেষাশেষি ঘটে সেই ভয়ঙ্কর ঘটনা। পানাগড়ে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ২৭ বছরের নৃত্যশিল্পী ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার কর্ণধার সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের। ওঠে রাতবিরেতে হাইওয়েতে আরেকটি গাড়ি থেকে ক্রমাগত কুকথা ও কুৎসিত অঙ্গভঙ্গির অভিযোগ। উঠে আসে অন্য গাড়ি থেকে একদল মত্ত পুরুষের খারাপ মন্তব্য ও ধাওয়া করার তত্ত্ব। কিন্তু পুলিশ তদন্তে নেমে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রথমেই নস্যাৎ করে ইভ - টিজিং-এর কথা। জানায়, একেবারেই রেষারেষি করে দুর্ঘটনা। প্রথমে ইভ-টিজিংয়ের অভিযোগ করা মৃতার গাড়ির চালকের বয়ানও বদলাতে শুরু করে সময়ে সময়ে। এবার গ্রেফতারও হলেন তিনি। ঘটনার ৮ দিনের মাথায় গ্রেফতার করা হয় সুতন্দ্রার গাড়ির চালক রাজদেও শর্মাকেও। 


কীভাবে বয়ান বদলেছেন তিনি ? ঘটনা ঘটার পরপরই ড্রাইভারের দাবি ছিল,  ডান দিকের গেট দিয়ে তাঁদের গাড়িকে বাঁদিকে পুরো চেপে দিয়েছিল সাদা গাড়িটি। ডিভাইডার ওপর তাঁদের নীল গাড়িটাকে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তুলতে পারেনি। তিনি তখন গাড়ি স্লো করে বাঁদিকে থানার রাস্তা ধরেন। কিন্তু অন্য গাড়িটি আবার  বাঁ দিক থেকে ওভারটেক করে  ধাক্কা মারে। তখন উল্টে যায় তাঁদের নীল গাড়ি। সেখানেই মারা যান সুতন্দ্রা। বারবার গাড়ির চালক অভিযোগ করে যান, অন্য গাড়ির যাত্রীরা বাজে ইঙ্গিত করছিল, টিটকিরিও করেছিল। তবে এই বয়ান তিনি বারবার বদল করেন।


পুলিশের দাবি, পরে জেরার মুখে স্বীকার করেছেন, সুতন্দ্রার কথাতে সাদা গাড়িকে ধাওয়া করছিলেন তিনি। সংবাদমাধ্যমের সামনেও রাজদেও পরে বলেন, 'আমাকে কেউ মেরে চলে যাবে, আমি তাকে কিছু বলব না? তা তো হতে পারে না। সেই স্পটে ম্যাডামের কথা আমি শুনছিলাম। ম্যাডাম আমাকে যেরকম বলল...ম্যাডাম বলল, তখন কারও মাথা কাজ করেনি...গাড়িটা ধরে ক্ষতিপূরণ নিতাম, কেন এরকম মারল?' তবে গ্রেফতার হওয়ার দিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেননি রাজদেও। তাঁর বয়ানে এত অসঙ্গতি কেন? প্রশ্ন তুলেছেন সুতন্দ্রার মা-ও।  সূত্রের খবর, উপযুক্ত তদন্ত চেয়ে এবার আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছেন তিনি। ইচ্ছাকৃতভাবে খুন, 
ইভটিজিংয়ের শিকার হয়েছেন সুতন্দ্রা বলে অভিযোগ পরিবারের। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে মেয়েকে মারা হয়েছে বলে পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে। বুধবারই কোর্টে যেতে পারে সুতন্দ্রার পরিবার। 


আরও পড়ুন :  হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেতেই ট্যাংরাকাণ্ডে গ্রেফতার প্রসূন দে, 'মৃত্যুর রাস্তা বেছে নিতে চাই..'!