সমীরণ পাল, করুণাময় সিংহ ও সুজিত মণ্ডল, কলকাতা : পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election) আগে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূলে ভাঙন। শাসকদল ছেড়ে কংগ্রেস, সিপিএম ও বিজেপিতে নাম লেখালেন একাধিক নেতা-কর্মী-সমর্থক। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। অন্যদিকে, নদিয়ায় বিজেপির শক্ত ঘাঁটিতে ভাঙন ধরিয়েছে তৃণমূলও। 


অশোকনগর-মানিকচক-খড়গ্রাম-রাজগঞ্জ। পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হতেই জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে তৃণমূলে ভাঙন ! মঙ্গলবারও কোথাও তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে, কোথাও সিপিএমে, আবার কোথাও বিজেপিতে যোগ দিলেন শ'য়ে শ'য়ে নেতা কর্মী !

পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পরদিন শুক্রবার মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামের রতনপুরে বাড়িতে ঢুকে গুলি করে খুন করা হয় কংগ্রেস কর্মী ফুলচাঁদ শেখকে। মঙ্গলবার সেই খড়গ্রাম ব্লকের পারুলিয়া, কীর্তিপুর ও ঝিল্লি- এই ৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে তৃণমূলের বুথ সভাপতি, অঞ্চল সভাপতি, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ-সহ শাসকদলের প্রায় আড়াই হাজার নেতা, কর্মী কংগ্রেসে যোগ দেন।

মালদাতেও সোমবার কংগ্রেসে যোগদান করেন তৃণমূল নেতা ও জেলা পরিষদের সদস্য সাবিনা ইয়াসমিন, মানিকচকের তৃণমূল নেতা ও মালদা জেলা কমিটির প্রাক্তন সহ-সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন, তৃণমূল পরিচালিত এনায়েতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য মহম্মদ মাজিরুদ্দিন-সহ প্রায় ২০০ নেতা কর্মী ! কংগ্রেসে যোগদানকারী মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, 'সাত মাস ধরে আমাকে কোনঠাসা করে রাখা হয়েছে। আমার স্ত্রী জেলা পরিষদের মেম্বার, তাঁকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি দলটা দুর্নীতিতে ভরে গেছে। তাই তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদান করলাম।'

রবিবার নবজোয়ার যাত্রায় উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার কর্মসূচির পর, হাবড়া ২ নম্বর ব্লকের শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাটিয়াগাছা এলাকার শতাধিক যুব তৃণমূল কর্মী সোমবার যোগ দেন কংগ্রেসে।

বাম-কংগ্রেসের পাশাপাশি, তৃণমূলে ভাঙন ধরিয়েছে বিজেপি। সোমবার জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে দলীয় নেতৃত্বের ওপর ক্ষোভ উগরে দিয়ে ২০০-রও বেশি কর্মী-সমর্থক নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন শিকারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রঞ্জিতা রায়।

অন্যদিকে, পঞ্চায়েত ভোটের আগে ভাঙন ধরেছে পদ্মশিবিরেও ! সোমবার নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার হাঁসখালি ও রানাঘাট এক নম্বর ব্লকের নেতা-কর্মী-সমর্থক মিলিয়ে প্রায় ১ হাজার জন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেন। এর মধ্যে রয়েছেন বিজেপির রাজ্য কিষান মোর্চার প্রাক্তন সহ সভাপতি বিমল বিশ্বাস।


এখন এই দলবদলের প্রভাব, পঞ্চায়েত ভোটের ফলের ওপর কতটা পড়ে, সেটাই দেখার।