কলকাতা: 'ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস মোকাবিলায় রাজ্যে আরও ১০ দিন থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী', কেন্দ্রীয় বাহিনীকে (Central Force) থাকার অনুমতি দিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।'রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন স্পর্শকাতর এলাকা শনাক্ত করবে', সেইসব জায়গাতেই মোতায়েন থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী, নির্দেশ প্রধান বিচারপতির ।
আদালত অনুমতি দিলে পর্যায় ভিত্তিক ভাবে তাদের প্রত্যাহার করা হবে, জানাল কেন্দ্র। 'যারা বাড়ি ফিরতে পারছেন না তাদের ফেরানোর ব্যবস্থা করবে পুলিশ', জেলার পুলিশ সুপার গোটা প্রক্রিয়ার ওপর নজর রাখবেন, নির্দেশ প্রধান বিচারপতির। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলির কী অবস্থা জানতে চান প্রধান বিচারপতি। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে অর্থ বরাদ্দ করে মেরামতি শুরু হয়েছে, জানায় রাজ্য।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি আরও ৪ সপ্তাহ বাহিনী রাখার আবেদন জানিয়েছিলেন আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। মামলাকারীর আবেদন বিবেচনা করে দেখবে কেন্দ্র, নির্দেশও দিয়েছিল আদালত। এনিয়েই আজ হয়ে গেল শুনানি। পাশাপাশি গত ১৭ জুলাই আমতা, বারুইপুরের পর পাঁচলায় যান শুভেন্দু অধিকারী। ভোট সন্ত্রাসে আক্রান্ত বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলেন। পাঁচলা থানাতেও যান বিরোধী দলনেতা। সেখানেই তিনি উল্লেখ করেছিলেন 'রাজ্যে আরও একমাস থাকুক কেন্দ্রীয় বাহিনী'।
ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে তরজা চলছিল। ভোটপর্বজুড়েই যা অব্যাহত রইল। যদিও গণনার দিন রাজ্য় নির্বাচন কমিশনার বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলে কিছুটা আটকানো যেত সন্ত্রাস। কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলে ভাল হত। আমরা তো প্রত্যেক বুথের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) আগেই চেয়েছিলাম, ভোট গণনার দিন এমনই দাবি করলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিন্হার (Rajiv Sinha)। যদিও রাজীব সিনহা বলেছেন,'শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে অনেক জায়গাতেই।'
ভোট পর্বে মিটে গিয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ এখনও একাধিক জায়গায় অব্যাহত অশান্তি। সেই মোতাবেক আদালতে আবেদন জানায় বিজেপি। আবেদনের ভিত্তিতেই কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা নিয়ে কেন্দ্রকে বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পঞ্চায়েত ভোট মিটলেই তা নিয়ে এখনও তরজা চলছে। বিরোধীদের অভিযোগ, ভোট লুঠ এবং বেলাগাম সন্ত্রাস চালাচ্ছে শাসকদল। যদিও দফায় দফায় এ নিয়ে পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূলও।
আরও পড়ুন, কাটোয়া গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে তলব করল CBI
কথা ছিল পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের সব বুথে হাজির থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রায় ৬০ হাজারে বেশি বুথে যাতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট করানো যায়, সেই কারণে ক্রমাগত তিরষ্কারের পর এমনই নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু ভোটের দিন কত বুথে হাজির থাকল কেন্দ্রীয় বাহিনী ? রক্তস্নাত গ্রাম বাংলার ভোট দেখে যে প্রশ্নই উঠছিল। উত্তরটা মাত্র চার ভাগের এক ভাগে। রাজীব সিনহা নিজে সেই তথ্য জানান। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, ৬০ হাজার বুথে থাকার কথা থাকলেও সব কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে না পৌঁছনোয় শেষ পর্যন্ত চারভাগের একভাগে, প্রায় ১৫ হাজার বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রাখা সম্ভব হয়েছিল। তবে ভোট মিটলেও, সন্ত্রাস অব্যাহত। ভোট সন্ত্রাস রুখতেই এবার সেই বাহিনীকে রাজ্যে আরও ১০ দিন রেখে দেওয়ার অনুমতি দিল আদালত।