ঋত্বিক প্রধান, পূর্ব মেদিনীপুর: দুয়ারে সরকার, দুয়ারে রেশনের আদলে এবার কি 'রাস্তায় প্রধান'-র ভাবনা? পূর্ব মেদিনীপুর (east midnapore) জেলার (district) এগরা (egra) ২ নম্বর ব্লকের মঞ্জুশ্রী গ্রাম পঞ্চায়েতের ছবি দেখে অনেকের মনেই এখন এমন কথা। কেন? প্রচণ্ড বৃষ্টিতে ছাতা মাথায় নিয়েই আমজনতাকে পরিষেবা দিচ্ছেন এখানকার পঞ্চায়েত প্রধান (panchayat pradhan)। সেটি দেখেই নানা চর্চ্চা নানা মহলে।


কী হয়েছে? 
পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, গত ৮ অগাস্ট, মঞ্জুশ্রী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিরা এলাকার মানুষের সমস্যার কথা শুনে রাতে এগরা থানায় গিয়েছিলেন। অভিযোগ, এগরা থানার ইন্সপেক্টর-ইন-চার্জ মৌসম চক্রবর্তী তাঁদের কোনও কথা না শুনেই থানায় আটক করেন। পর দিন অর্থাৎ ৯ অগাস্ট দুপুর ১২ টায় থানা থেকে ছাড়া হয় তাঁদের। 
ঘটনার প্রতিবাদে চলতি সপ্তাহে মঞ্জুশ্রী গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা পঞ্চায়েত বয়কট করেন। প্রধান পূর্ণিমা মাইতিও তাই আর গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে আসেন না। কিন্তু তা বলে পরিষেবা বন্ধ নেই। কখনও রাস্তায়, কখনও আবার চায়ের দোকানে বসেই আমজনতাকে পরিষেবা দিয়ে চলেছেন তিনি। সাধারণ মানুষের কথা শুনছেন, প্রয়োজন মতো পাশে দাঁড়াচ্ছেন সেখান থেকেই। তাঁর কথায়, 'এগরা থানার আইসি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের যে ভাবে হেনস্থা করেছেন তার  তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এরকম ঘটনা ঘটলে কোনও নির্বাচিত সদস্য! মানুষের হয়ে কোনও সুবিধা-অসুবিধার কথা বলতে পারবে না। তা হলে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি থেকে কী লাভ? এগরা থানার আইসি-র এরকম আচরণ মেনে নেওয়া যায় না।' সঙ্গে সংযোজন, 'আমরা গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে এগরা ২ নম্বর ব্লকের বিডিও-র কাছে কৌশিশ রায়ের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। যত দিন উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হবে, তত দিন পর্যন্ত আমরা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস বন্ধ থাকবে।' এই প্রসঙ্গে এগরা ২ নম্বর ব্লকের বিডিও জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে। বিষয়টি তিনি উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের গোচরে এনেছেন সে কথাও জানান কৌশিশ। 


জেলায় জেলায় বিতর্কে পঞ্চায়েত...
দুর্নীতির তথ্যপ্রমাণের লোপাটের চেষ্টা চলছে, এই অভিযোগে হালে একের পর এক পঞ্চায়েত দফতরে তালা মেরে দিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ও বিজেপি কর্মীরা। প্রথমে,  মেখলিগঞ্জ,তার পর নন্দীগ্রাম। পরে সেই তালিকায় জোড়ে শালবাড়ির নামও। রাতের অন্ধকারে কী কাজ? প্রশ্ন তুলে গত ১২ অগাস্ট প্রধান-সহ বেশ কয়েক জনকে তালা বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগ ওঠে সেখানকার বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। পরে পুলিশ এসে তালা খুলে উদ্ধার করে তাঁদের। ঘটনার খবর ছড়াতেই চাঞ্চল্য এলাকায়। গ্রেফতার করা হয় ৩ বিজেপি কর্মীকেও যার প্রতিবাদে বক্সিরহাট থানা ঘেরাও করে বিজেপি। তুফানগঞ্জের বিজেপি বিধায়ক মালতী রাভা রায়ের নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখানো হয়। 
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা ২ নম্বর ব্লকের মঞ্জুশ্রী গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে অবশ্য অন্য কেউ পঞ্চায়েত দফতরে তালা দেননি। এগরা থানার আইসি বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে দফতরে যান না প্রধান নিজেই। 


আরও পড়ুন:পুজো অনুদান নিয়ে আপত্তি, হাইকোর্টে দায়ের তৃতীয় মামলা