সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: রাজ্য সরকারের পুজো অনুদান নিয়ে এবার হাইকোর্টে দায়ের হল তৃতীয় মামলা। ৪৩ হাজার পুজো কমিটিকে ৬০ হাজার টাকা এবং বিদ্যুৎ বিলে ছাড় দেওয়ার বিরোধিতায় মামলা দায়ের হয়েছে। আগামীকাল শুনানির সম্ভাবনা। পুজো অনুদানের বিরোধিতা করে গতকাল হাইকোর্টে (Calcutta High Court) দায়ের হয়েছে ২টি মামলা। মহার্ঘ ভাতা না দিয়ে কেন অনুদান? এই প্রশ্ন তুলেই মামলা দায়ের হয়েছে।
এর আগের দিন যে মামলা করা হয়েছিল, তাতে মামলাকারীর প্রশ্ন ছিল, আদালতের নির্দেশ মেনে সরকারি কর্মচারীদের DA না দিয়ে, কেন পুজোয় অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? কেন ছাড় দেওয়া হল পুজো কমিটির বিদ্যুৎ বিলে? যেখানে অনেক মানুষ এখনও খাবার, পরিশুদ্ধ জল, বিদ্যুৎ, ওষুধ পাচ্ছেন না, সেখানে কেন এই অনুদান? যেখানে অনেকের স্কুলে যাওয়ার সঙ্গতি নেই, সেখানে কী করে রাজ্য সরকার পুজোয় অনুদান দিচ্ছে? এই অনুদান কোন বৃহত্তর জনস্বার্থে লাগবে? অবিলম্বে রাজ্যকে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের নির্দেশ দিক আদালত। এমনই আবেদন জানিয়ে, হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মামলাকারী।
মহার্ঘ ভাতা নিয়ে প্রশ্ন:
চলতি বছরের ২০ মে, সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা ৩ মাসের মধ্যে মিটিয়ে দিতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। সময়সীমার আড়াই মাসের মাথায়, এই নির্দেশ, পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। অভিযোগ উঠেছে যে যেখানে ডিএ নিয়ে এত টালবাহানা করছে রাজ্য। সেখানে কেন এভাবে বরাদ্দের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে? পরিসংখ্যান বলছে এই মুহূর্তে কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকারি কর্মীদের মধ্যে DA-র ফারাক ৩১ শতাংশ।
নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তৃণমূলনেত্রী বলেন, 'পুজো করতে গেলে খরচ তো আছেই। কেন্দ্র আমাকে পয়সা দিচ্ছে না। একশো দিনের কাজের টাকাই নেই। সব প্রকল্পের বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছে।' তা সত্ত্বেও বিশ্বের অন্যতম সেরা উৎসব যাতে কোনও ভাবে ধাক্কা না খায়, সে জন্য একাধিক ব্যবস্থার কথা বলেন তিনি। কী সেগুলি? মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থাগুলি যাতে ছাড়ের পরিমাণ ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬০ শতাংশ করে সে ব্যাপারে কথা বলবেন। সঙ্গে মনে করান, বিজ্ঞাপন বাবদে কোনও কর দিতে হয় না। উদ্যোক্তাদের সুবিধার জন্যও অনলাইনে আবেদনেরও ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। এর পরই সরকারি অনুদানের প্রসঙ্গে বলেন, 'গত বার কত দিয়েছিলাম? আমার ভাঁড়ার শূন্য। মা দুর্গা ভাঁড়ার ভর্তি করবেন আশা করি। তাই আমাদের কষ্ট থাকা সত্ত্বেও ৫০ হাজার টাকাকে ৬০ হাজার টাকা করে দিলাম।'
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury) বলেন, 'ঘরে টাকা নেই, মূল্য আকাশ ছোঁয়া, DA দেওয়ার নাম নেই কিন্তু কর্মীদের খুশি করতে আর রাজনীতি করতে মুখ্যমন্ত্রী টাকা দিচ্ছেন।' কোনও পুজো কমিটি অনুদান চায়নি। মানুষের ট্যাক্সের টাকায় এসব করা হচ্ছে। পুজো অনুদানে জনস্বার্থ মামলার প্রসঙ্গে এমনই মন্তব্য করলেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
আরও পড়ুন: স্ত্রী, সন্তানদের জন্য কত রেখে গেছেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা ? শুনলে আঁতকে উঠবেন !