কলকাতা: বড়দিন জেলেই কাটাতে হবে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। বৃহস্পতিবার ফের জামিনের আর্জি খারিজ হয়ে গেল পার্থ-সহ সাত জনের। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ওই সাত জনকেই ফের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠাল আদালত।  জামিনের আর্জি জানালেও, আলিপুর আদালতে তা খারিজ হয়ে গেল। তাই আপাতত ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত জেলেই থাকতে হবে পার্থ-সুবীরেশ ভট্টাচার্যদের।


এ দিন আদালতে জামিনের আর্জির শুনানি চলাকালীন, পার্থর আইনজীবী কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তোলেন। অভিযোগ করেন যে, তদন্তের নামে পেশিশক্তি প্রদর্শন করছে CBI. এর পাল্টা সিবিআই-আইনজীবী বলেন,  "আমরা প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী দেখি না, অপরাধীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করি।" 


পার্থকে অসাংবিধানিক ভাবে আটকে রাখার চেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন তাঁর আইনজীবী। এর পাল্টা সিবিআই-এর আইনজীবী বলেন, "CBI'এর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। কিন্তু CBI তদন্তে ওমপ্রকাশ চৌটালা, পিভি নরসিমা রাও, লালুপ্রসাদ যাদবের কেসে ভবিষ্যতে কী হয়েছিল তা গোটা দেশ দেখেছে। আমরা প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী দেখি না। অপরাধীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করি এবং সময় মতো কোর্টকে জানায়।"


সোমবার, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, SSC’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য, SSC’র প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্হা, প্রাক্তন সচিব অশোককুমার সাহা এবং নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত, ২ মিডলম্য়ান প্রসন্ন রায় ও প্রদীপ সিংহকে আলিপুর আদালতে তোলা হয়।

জামিনের আবেদন জানিয়ে, এজলাসে আজমল কসাভের প্রসঙ্গ তোলেন পার্থর আইনজীবী। তিনি বলেন, "ষড়ষন্ত্রের অভিযোগ করা হচ্ছে। কিন্তু, বিশদ তথ্য দেওয়া হচ্ছে না। সবিস্তার তথ্য দিলে বলতে পারব যে, আমি (পার্থ চট্টোপাধ্যায়) এটা করিনি। আজমল কসাভকেও বিচার করে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। আমাকে রিমান্ড কপি ছাড়া কিছুই দিচ্ছে না।"


এর পাল্টা, পার্থর জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআই-এর আইনজীবী বলেন, "মামলার গুরুত্ব বিচার করে অভিযুক্তদের হেফাজতে রাখা প্রয়োজন। প্রত্যেকেই প্রভাবশালী। তদন্তে কী উঠে আসছে সেটা কেস ডায়েরিতে আছে। রোজ নতুন নতুন তথ্য উঠে আসবে না, এটাই স্বাভাবিক।"

জামিনের আবেদন করে এ দিন আদালতে CBI হেফাজতে বগটুই কণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখের প্রসঙ্গ তোলেন শান্তিপ্রসাদ সিন্হার আইনজীবী।
তিনি বলেন, "বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের মানে কী? আমরা জানি না। তদন্ত এবং বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের ত্বত্ত্বে ইতিমধ্যেই এক জনের মৃত্যু হয়েছে।" তাতে বিচারক বলেন, "একটি ঘটনার জন্য গোটা প্রতিষ্ঠানকে দোষারোপ করা ঠিক নয়।" সওয়াল জবাব শেষে, ধৃতদের ১৪দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।