কলকাতা : প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে ED ও CBI। দুর্নীতি দমন আইনের ১৯ নম্বর ধারাতে বলা হয়েছে, সরকারি পদে থাকা কারও বিরুদ্ধে চার্জশিট দিতে হলে সরকারের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক।


CBI এর দাবি
আদালতে CBI দাবি করে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও শান্তিপ্রসাদ সিন্হা, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় সহ একদা সরকারি পদে থাকা ৬ জনের নাম চার্জশিটে রাখার জন্য, অনুমতি চেয়ে রাজ্য সরকারকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অনুমতি মেলেনি।

চার্জশিট নিয়ে কী বললেন বিমান
এদিন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নামে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার চার্জশিট দেওয়া নিয়ে মুখ খুললেন বিধানসভার অধ্যক্ষ। বিধানসভার অধ্যক্ষ  বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ' পার্থর বিরুদ্ধে চার্জশিট দিতে গেলে স্পিকারের অনুমতি লাগে, কিন্তু কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি আমার কাছ থেকে, কার কাছ থেকে নিয়েছে জানতে হবে। '


বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, ' পার্থর সঙ্গে ১১ বছর অনেক কাজ করেছি, বিজয়ার সময় দেখা হচ্ছে না, মন তো একটু খারাপ লাগছে। দেখা করতে চান?' 


নিয়োগ-দুর্নীতি মামলার চার্জশিটে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মাস্টারমাইন্ড বলে দাবি করেছে সিবিআই। পাশাপাশি এই চার্জশিটে বলা হয়েছে, শিক্ষক নিয়োগে প্রভাব খাটানোর উদ্দেশ্যেই, শান্তিপ্রসাদ সিন্হাকে SSC’র উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল। দুর্নীতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন যাঁরা, তাঁদেরও ষড়যন্ত্রমাফিক সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। স্কুলের নিয়োগে দুর্নীতির মামলায়, ইডির হাতে প্রথম গ্রেফতার হয়েছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ঠিক তারপরই সিবিআইয়ের গ্রেফতার হন, স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্হা। স্কুল সার্ভিস কমিশনে এই শান্তিপ্রসাদই কি ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আসল ঘুঁটি? তাঁকে সামনে রেখেই কি দুর্নীতির ব্লু প্রিন্ট তৈরি করেছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী?জল্পনা উস্কে দিয়েছে সিবিআইয়ের চার্জশিট। এই চার্জশিটে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিয়োগ দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড।


সিবিআইয়ের চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, তদন্তে উঠে এসেছে, যে পার্থ চট্টোপাধ্যায় একেবারে ষড়যন্ত্রমাফিক, কোনও যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা ছাড়া, এবং SSC’র বিধিবদ্ধ নিয়মের বিরুদ্ধে গিয়ে, স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারপার্সনের পদ থেকে শর্মিলা মিত্রকে সরিয়ে দেন। যাতে শান্তিপ্রসাদ সিন্হা নিয়োগ-দুর্নীতি সংক্রান্ত জালিয়াতি চালিয়ে যেতে পারেন। 


তদন্তে জানা গেছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, এই মামলার অন্যান্য অভিযুক্তর সঙ্গে মিলে, SSC’র চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকারের ওপর চাপ তৈরি করেছিলেন, যাতে পর্ণা বসুকে পশ্চিমবঙ্গ সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশন থেকে সাদার্ন রিজিওনাল কমিশনে বদলি করা হয়। সব মিলিয়ে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে রাজ্য রাজনীতি সমানভাবে উত্তপ্ত।