প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: SSC দুর্নীতিকাণ্ডে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আদালতে বিস্ফোরক ইডি (ED)। নিয়োগ দুর্নীতিতে প্রাক্তন মন্ত্রীকে সরাসরি অভিযুক্ত বলে দাবি। আদালতে ইডি-র দাবি, পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতার বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া প্রায় ২৮ কোটি টাকা চাকরি-বিক্রির টাকা। এই টাকা অর্পিতার ফ্ল্যাটে রেখেছিলেন পার্থ। আদালতে ইডি-র দাবি, বেলঘরিয়ার যে ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে, সেই ঠিকানায় পার্থর পরিবারের এক ঘনিষ্ঠের অফিস রয়েছে। 


পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আদালতে বিস্ফোরক ইডি: SSC দুর্নীতিকাণ্ডে গতকাল নগর দায়রা আদালতে তোলা হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। পার্থকে SSC দুর্নীতিতে সরাসরি অভিযুক্ত করে আদালতে ইডি-র দাবি করে, তিনি শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন নিয়োগ প্রক্রিয়া মেধার ভিত্তিতে নয়, সুপারিশের ভিত্তিতে হয়েছিল। ইডি-র আরও দাবি, SSC গ্রুপ ডি-র চাকরি-দুর্নীতিতেও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের যোগ স্পষ্ট। পার্থর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য নামে এক পরীক্ষার্থীর অ্যাডমিট কার্ড। ময়নাগুড়ির প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারীর সুপারিশ-পত্রেও এই ইন্দ্রনীলের নাম রয়েছে বলে আদালতে দাবি ইডি-র। 


গতকালের শুনানিতে আদালতে ইডি দাবি করে, LIC’র থেকে পাওয়া নথি ও তথ্য অনুযায়ী, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম ‘Uncle’ হিসাবে দেখিয়েছেন অর্পিতা। এর থেকে দু’জনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বোঝা যায়। ED’র আইনজীবী আরও বলেন, আইন বলছে এই ধরনের মামলায় সাড়ে ৩ বছরের আগে জামিন দেওয়া যায় না। সম্পত্তি বৃদ্ধি ও ভুয়ো কোম্পানি তৈরির মাস্টারমাইন্ড পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি গরিব ছেলে-মেয়েদের কম টাকায় ভুয়ো কোম্পানিতে কাজ করিয়ে শোষণ করতেন। নতুন আরও ৩০টি অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে। এ’নিয়ে মোট ১০০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ পাওয়া গেছে। এই সব অ্যাকাউন্টের লেনদেন খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। ২০১টি ভুয়ো কোম্পানির মাধ্যমে সোনারপুরে অপা ইউটিলিটি সার্ভিসেসের নামে জমি কেনা হয়। সেখানে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। সিমবায়োসিস মার্চেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামে আরও একটি ভুয়ো কোম্পানির হদিশ মিলেছে।  এই কোম্পানির শেয়ারের দামে কারচুপি করে, প্রায় পৌনে তিন কোটি কালো টাকা সাদা করা হয়েছে। 


পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে সশরীরে আদালতে হাজির করার পরিবর্তে ভার্চুয়াল শুনানির আবেদন করেছিল প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষ। তাদের আর্জি মতোই গতকাল ভার্চুয়াল শুনানি হয়। এর বিরোধিতা করে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী এদিন বলেন, সশরীরে আদালতে হাজির হওয়া মৌলিক অধিকার। জেল কর্তৃপক্ষ মৌলিক অধিকার হরণ করার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে, ফের খারিজ হল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন। যে কোনও শর্তে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর জামিনের আর্জিতে সাড়া দিল না আদালত। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জেল হেফাজতের সময়সীমা আরও বাড়ল। আরও ১৪ দিন তাঁকে জেলেই থাকতে হবে। 


আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: মানহানি মামলায় শুভেন্দুকে হাজিরার নির্দেশ নিম্ন আদালতের, হাইকোর্টে যাচ্ছেন বিরোধী দলনেতা