প্রকাশ সিনহা, কলকাতা : নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আরও বিপাকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্যের পর পার্থর বিরুদ্ধে সাক্ষী আরও এক আত্মীয়। পার্থর বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিলেন আত্মীয় কৃষ্ণচন্দ্র অধিকারী। তাঁর দাবি, 'অজান্তেই আমায় একটি সংস্থার ডিরেক্টর বানানো হয়। ওই সংস্থার নামেই পিংলার স্কুলের জন্য জমি কেনা হয়। কতটা জমি কেনা হচ্ছে, সে বিষয়ে আমায় জানানো হয়নি। টাকার লেনদেনের তথ্যও দেওয়া হত না। আমায় শুধু সই করতে বলা হত বিভিন্ন নথিতে। কল্যাণময়ের ওপর ভরসা করেই সই করে দিতাম। নামেই সংস্থার ডিরেক্টর ছিলাম', বয়ান কৃষ্ণচন্দ্র অধিকারীর। ED-র বিশেষ আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে দাবি পার্থর আত্মীয়ের ।


রাজসাক্ষী হয়ে কেলেঙ্কারির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি জামাইয়ের


এর আগে শ্বশুরের বিরুদ্ধে রাজসাক্ষী হয়ে কেলেঙ্কারির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন জামাই। প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ইডি-র করা মামলায় আর অভিযুক্ত নন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য। শ্বশুরের বিরুদ্ধে রাজসাক্ষী হয়েছেন। তাতেই কি কল্যাণ হয়েছে জামাইয়ের ? পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের জামাই কল্য়াণময় ভট্টাচার্যর নাম, অভিযুক্তের তালিকা থেকে সরানোর জন্য ED-র আবেদনে মান্যতা দিয়েছে আদালত। 


ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায়ের ফ্ল্য়াট থেকে টাকার পাহাড় বাজেয়াপ্ত হওয়ার পর নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়। তারপর তদন্তে উঠে আসে তাঁর জামাই কল্য়াণময় ভট্টাচার্যর নামও। তদন্তে ED-র র‍াডারে আসে পার্থর প্রয়াত স্ত্রীর নামে পিংলায় তৈরি হওয়া স্কুল। যার চেয়ারম্যান ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য। ED-র চার্জশিটে অভিযুক্ত হিসেবে নাম ছিল প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর জামাইয়ের। সম্প্রতি দুর্নীতির মামলায় জেলবন্দি শ্বশুর পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে রাজসাক্ষী হয়েছেন জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য। গত শনিবার কলকাতা নগর দায়রা আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে তাঁর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়। তারপরই ED-র তরফে কলকাতা নগর দায়রা আদালতে তাদের বিশেষ কোর্টে আবেদন জানানো হয়, চার্জশিট থেকে অভিযুক্ত হিসেবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাইয়ের নাম বাদ দেওয়া হোক। সূত্রের খবর, সেই আবেদনে অনুমতি দিয়েছে আদালত। 


ED-র বিশেষ আদালতের রায়ের কপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কল্যাণময় ভট্টাচার্য স্বেচ্ছায় রাজসাক্ষী হতে চেয়েছেন এবং তাঁর উপর কেউ প্রভাব খাটায়নি। তাঁকে এটাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রাজসাক্ষী হিসেবে আদালত তাঁকে যদি ক্ষমাও করে, তবু তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হবেন না। 


অন্যদিকে সিবিআইয়ের মামলায় পার্থর জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। আইনজীবীর দাবি, যে সব অভিযোগ তাঁর মক্কেলের নামে উঠেছে, তার সাপেক্ষে প্রমাণ্য নথি তেমন দেখা যাচ্ছে না। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২৭ তারিখ।