কৌশিক গাঁতাইত, পশ্চিম বর্ধমান: পুরনিগমের বোর্ড তৈরি হয়নি। মঙ্গলবার যিনি সাংবাদিক বৈঠক করলেন তিনি বিজেপি কাউন্সিলর। আর ডেপুটি মেয়র হিসেবে যার নাম ঘোষণা করলেন তিনি তৃণমূলের (TMC) কাউন্সিলর। পুরোটাই বিদ্রূপের ছলে।  


ভোট হয়েছে। ফল বেরিয়েছে। তারপরে সাড়ে তিনমাস কেটে গেলেও শপথ নিয়েছেন শুধুমাত্র চেয়ারম্যান ও মেয়র (Mayor)। এখনও বোর্ডই গড়া হয়নি। এমনই ছবি আসানসোল পুরনিগমের। বারবার বোর্ড গড়ার দাবিতে আওয়াজ তুলেছেন আসানসোল পুরসভা বিজেপি (BJP) কাউন্সিলর চৈতালি তিওয়ারি। বারবার বলেও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। আদালতের দরজাতেও গিয়েছেন তিনি। এবার এমনই অভিনব প্রতিবাদ। তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার ডেপুটি মেয়র (Deputy Mayor) ও বোর্ড সদস্যদের নাম ঘোষণা করল বিজেপি। 


এদিন সাংবাদিক বৈঠকে আসানসোল পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি (BJP) কাউন্সিলর চৈতালি তিওয়ারি বলেন, 'ডেপুটি মেয়রের নাম তো আমাদের দাদা বললেনই, উজ্জ্বল দা, খুব ভাল মানুষ। উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়, উনি একজন অভিজ্ঞ মানুষ। প্রাক্তন চেয়ারম্যান ছিলেন, প্রাক্তন বিধায়ক। তো উনি আমার মনে হয় খুব ভালভাবে কাজকর্ম করতে উঠতে পারবেন।' উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় আসানসোল পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর এবং কুলটির প্রাক্তন বিধায়ক। 


বিজেপির অভিযোগ:
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি আসানসোল পুরসভার ফল ঘোষণা হয়েছে। কিন্তু সাড়ে তিন মাসের মধ্যে শপথ নিয়েছেন শুধুমাত্র মেয়র ও চেয়ারম্যান। অভিজিৎ ঘটক এবং ওয়াসিমুল হকের নাম ডেপুটি মেয়র হিসেবে ঘোষণা করা হলেও, তাঁরা শপথ নেননি। মেয়র পারিষদদের নামও ঘোষিত হয়নি। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার মেয়র বিধান উপাধ্যায়ের বদলে অভিজিৎ ঘটক বাজেট পেশ করেন বলে অভিযোগ তোলে বিজেপি। প্রতিবাদে সভাকক্ষ ত্যাগ করেন গেরুয়া শিবিরের কাউন্সিলররা। এরপরই কটাক্ষের সুরে নিজেদের মতো করে ডেপুটি মেয়র ও মেয়র পারিষদ সদস্যদের নাম ঘোষণা করে দেয় বিজেপি। 


তৃণমূলের কটাক্ষ:
বিজেপির কাজকে গুরুত্ব দিতে চাইছে না তৃণমূল। আসানসোল পুরসভার মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, 'ওরা আগে নিজের দল বাঁচাক, আমরা দরজা খুলে দিলে অনেকেই চলে আসবে।' কটাক্ষ করেছেন চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, 'কোনও কাউন্সিলর বাজেট পেশ করেননি, বাজেট পেশের প্রস্তাব করেছিলেন অভিজিৎ ঘটক। মেয়রই পরে এসে করেছেন। ওনারা পুরো মিটিংয়ে কখনও থাকেন না, ছবি তোলাতেই ব্যস্ত থাকেন।'


পুরসভার কী ছবি:
গত পুরভোটে ১০৬ ওয়ার্ডের আসানসোল পুরসভায় তৃণমূল জিতেছে ৯১টি ওয়ার্ডে। বিজেপির দখলে ৭টি। কংগ্রেস পেয়েছে ৩টি। বামেদের দখলে গিয়েছে ২টি। নির্দলরা তিনটি ওয়ার্ডে জয়লাভ করেছে। পরে কংগ্রেসের একজন ও দুই নির্দল কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগদান করায় তৃণমূলের কাউন্সিলর সংখ্যা বেড়ে হয় ৯৪।


আরও পড়ুন: এভারেস্ট জয়ী পিয়ালি বসাকের হাতে এক লক্ষ টাকা তুলে দিল হুগলি জেলা সিপিএমের ছাত্র-যুবরা