মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: যান চলাচল চালু হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিপত্তি। ফাটল ধরল বুদবুদে সেচ দফতরের সেতুতে।  নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সেতু নির্মাণেই বিপত্তি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের (Irrigation Department)। তাতে তীব্র সামলোচনার মুখে প্রশাসন। শাসকদলের (TM) তরফে সেতু মেরামত করে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যদিও। তবে ক্ষোভ সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে বিজেপি (BJP)। 


চালু হওয়ার একদিনের মধ্যেই ফাটল সেচ দফতরের সেতুতে


পশ্চিম বর্ধমানের (Paschim Bardhaman News) দুর্গাপুরের বুদবুদের বিলাসপুরের কাছে একটি সেচ খাল রয়েছে। বিলাসপুর, দেবশালা, ভাত কুন্দা-সহ প্রায় ১৯টি গ্রামের পানাগড় অথবা বর্ধমান যাওয়ার রাস্তা বলতে ভরসা এই সেচ খালের উপর তৈরি সেতু। এতদিন অস্থায়ী একটি সেতু দীর্ঘদিন ধরে মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছিল। বিপদ মাথায় নিয়ে তার উপর দিয়েই যাতায়াত করছিলেন স্থানীয়রা। 


দীর্ঘ দিন ধরে অভিযোগ পেতে পেতে সম্প্রতি খালের উপর পাকা সেতু তৈরিতে উদ্যোগী হয় প্রশাসন। বিগত দুই মাস ধরে সেই মতো সেতু তৈরির কাজ চলছিল। শেষমেশ সোমবার পাকা সেতু খুলে দেওয়া হয় সাধারণ মানুষের জন্য। কিন্তু চালু হওয়ার পর ২৪ ঘণ্টাও কাটল না, ফাটল ধরল এই সেতুতে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, সেতুটি ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। একদিনের মধ্যে এমন পরিস্থিতিতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের দিকেই আঙুল তুলেছেন স্থানীয়রা। 


আরও পড়ুন: TMC Martyr Day 2022: ২১ জুলাই কোন কোন রাস্তা ওয়ানওয়ে, একনজরে


এই ঘটনার জেরে মঙ্গলবার ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিলাসপুর -সহ আশপাশ বেশ কিছু গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি,অবিলম্বে ঠিকঠাক ভাবে সেতু তৈরি করে দিতে হবে। নইলে বিপজ্জনক এই সেতু বন্ধ করে দেবেন তাঁঁরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে তড়িঘড়ি ছুটে আসেন সেচ দফতরের কর্তারা। তাঁদের সামনে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। তবে সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি, তাঁদের কাজে কোনও খামতি ছিল না। মনোজ কর নামে সেচ দফতরে কর্মরত ইঞ্জিনিয়ার বলেন, " আমরা ফের মেরামতি করে দিচ্ছি। কিন্তু এই ঘটনার দায় গ্রামবাসীদের। এটা রিপেয়ার জব। তাই ওভারলোডিং গাড়ি চললেই সমস্যা বাড়বে।"


বিশ্বব্যাঙ্কের দেওয়া ২৭০০কোটি  টাকায় পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম  এবং পুরুলিয়ার বেশ কিছু অংশে কাজ শুরু করেছিল সেচ দফতর। যে সেতুটিকে ঘিরে বিতর্কস, ২২ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে সেটির পিছনে। এই ঘটনায় বুদবুদ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। উত্তেজিত গ্রামবাসীদের শান্ত করে তারা। 


স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে প্রশাসন


প্রায় ৩০ হাজার মানুষ এই সেতুর উপর নির্ভরশীল। পানাগড় বা বর্ধমান যেতে এই সেতু ব্যবহার করলে প্রায় ২০ কিলোমিটার কম রাস্তা পার করতে হয়। ফলে অনেকটাই সময় বাঁচার কথা।  গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, স্থায়ী ভাবে মেরামত না করে কাজ শুরু করলে, ফের তাঁরা খালের উপর তৈরি এই সেতু বন্ধ করে দেবেন। শাসকদলের তরফে তাঁদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যদিও। তবে এই ঘটনায় ইস্যুতে সুর চড়িয়েছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। দলের পূর্ব বর্ধমান জেলা সদর সহ-সভাপতি রমণ শর্মার অভিযোগ, "টাকার খেলা হয়েছে। আর তৃণমূল তো রয়েইছে । স্বাভাবিক ভাবেই দুর্নীতি হয়েছে। তাতে বিপদে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।"