মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পানাগড়: পানাগড় শিল্পতালুকে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। এলাকায় স্পিরিট এবং ইথানল তৈরির কারখানা রয়েছে। সেখান থেকেই গোটা এলাকা দুর্গন্ধে ভরে গিয়েছে বলে অভিযোগ। সেই নিয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অধিকারিকদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয়রা। থানা, পঞ্চায়েত সমিতি, বিডিও অফিসেও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং কারখানা কর্তৃপক্ষ। (Panagarh News)
স্থানীয়দের দাবি, স্পিরিট তৈরির কারখানার দুর্গন্ধে গোটা এলাকা ঢেকে গিয়েছে। একাধিক বার সেই নিয়ে অভিযোগ জানানো হয় প্রশাসনের কাছে। সেই অভিযোগই খতিয়ে দেখতে আসেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিকরা। আর তাতেই ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় কাঁকসার পানাগড় শিল্পতালুকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পৌঁছয় বিরাট পুলিশ বাহিনীও। (Paschim Bardhaman News)
যে কারখানার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার ম্যানেজার বিদ্যুৎ রায় বলেন,"এই কারখানায় ইথানল তৈরি হয়। এখন মৃদু একটা গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আমরা বিশেষজ্ঞদের বিষয়টি জানিয়েছি। কী কারণে এই দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, তা খতিয়ে দেখবেন বিশেষজ্ঞরা, সেই মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।" কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে যে পরিস্থিতি, তাতে কর্তৃপক্ষের কথায় ভরা রাখতে পারছেন না স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের দাবি, প্রতিনিয়তই বের হচ্ছে দুর্গন্ধ। সেই দুর্গন্ধে কাঁকসার সুভাষপল্লী, মনোজপল্লী ডাকবাংলো-সহ বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন। সেই নিয়েই বুধবারই কাঁকসার বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয়রা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের আঞ্চলিক দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিকরা ওই স্পিরিট তৈরির কারখানা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে পৌঁছন। আর দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিকরা এসেছেন শুনেই কারখানার সামনে পৌঁছে যান এলাকার মানুষজন, বিক্ষোভ দেখান।
মৌসুমী ভট্টাচার্য নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন,"এই দুর্গন্ধে বাড়িতে থাকা যাচ্ছে না। অসুস্থ হয়ে পড়ছি আমরা। দ্রুত কড়া ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটব।" ওই কারখানা পরিদর্শনের পর দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিকরা বেরিয়ে যেতে উদ্যত হলে এলাকাবাসীরা ঘিরে ধরেন সকলকে। প্রশ্ন শোনা যায়, "কেন কোন পদক্ষেপ করছেন না আপনারা?" তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিকরা বচসায় জড়িয়ে পড়েন স্থানীয়দের সঙ্গে।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিক চিরঞ্জিৎ দাঁ বলেন,"সাত দিনের মধ্যে কাঁকসার বিডিও অফিসে কারখানা কর্তৃপক্ষ, এলাকাবাসী, ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বৈঠক করবে। কেন দূষণ ছড়াচ্ছে, জানতে চাওয়া হবে কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে। সমাধানের চেষ্টা চালাবে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ।"