মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর : বহুতলের দেওয়াল ঘিরেছে দিঘি। আবর্জনায় দূষিত জল। মুখ ফিরিয়েছে পরিযায়ী পাখিরা (Migratory Birds)। এবার দুর্গাপুর শহরের (Durgapur Town) শতাব্দীপ্রাচীন দিঘি সংস্কারের কাজ শুরু করল আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ। পুরভোটের আগে এই উদ্যোগ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
বছর পাঁচেক আগেও, শীতের মরসুমে দুর্গাপুরের এই দিঘিতেই কয়েক হাজার কিলোমিটার পথ পেরিয়ে হাজির হত শয়ে শয়ে পরিযায়ী পাখি। শহরের ফুসফুস বলতে একসময় চোখের সামনে ভেসে উঠত এই দিঘিরই ছবি। তবে ভবানী পাঠকের নামাঙ্কিত এই দিঘির গা ঘেঁসেই বর্তমানে গড়ে উঠেছে একের পর এক বহুতল। আবর্জনায় দূষিত জলে খোলা আকাশ নয়, এখন দেখা যায় বহুতলের ছায়া।
সংস্কারের অভাবে আগাছায় ভরেছে চারপাশ। সম্প্রতি দুর্গাপুর পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের এই দিঘি সংস্কার ও সৌন্দর্যায়নের উদ্যোগ নিয়েছে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ। শুক্রবার এই প্রকল্পের সূচনা হয়। যার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১ কোটি ৬ লক্ষ টাকা।
আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান ও বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ৬৬ লক্ষ টাকা সংস্কারের জন্য মঞ্জুর হয়েছে। বাকি টাকায় সৌন্দর্যায়ন হবে। চারদিকে বহুতল, জলাশয় দখল হয়ে গিয়েছিল। দখলমুক্ত করে সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে চলতি বছরের অগাস্টে শেষ হচ্ছে তৃণমূল পরিচালিত দুর্গাপুর পুরসভার মেয়াদ। ফলে দিঘি সংস্কারে রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছে বিরোধীরা। এই নিয়ে একযোগে আক্রমণ শানিয়েছে বাম-বিজেপি।
দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্ণণ ঘোড়ুই বলেন, টাকা মঞ্জুর হলেও কাজের কাজ হবে বলে মনে হয় না। সামনে পুরসভার ভোট, তাই ভোটের আগে এসব করা হচ্ছে। গত ১০ বছর পুরসভা তৃণমূলের দখলে। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। খালি গোষ্ঠীবাজি, কাটমানি, অশান্তি হয়েছে।
পশ্চিম বর্ধামন সিপিএম জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, তৃণমূল নেতাদের মদতে চারদিকে পুকুর ভরাট করে প্রোমোটারি চলছে। এটা লোকদেখানো কাজ হচ্ছে।
যদিও শহরের প্রাণকেন্দ্রে এই দিঘি সংস্কারের সিদ্ধান্তে খুশি দুর্গাপুর শহরের বাসিন্দারা। রাজনৈতিক টানাপোড়েন দূরে সরিয়ে, তাঁরা চান শহরের বুকে এই দিঘিকে বাঁচিয়ে রাখতে।