মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর : বেড়েছে জ্বালানির দাম। কিন্তু বাস ভাড়া বাড়েনি। ফলে, চূড়ান্ত সমস্যায় বাস মালিকরা। দুর্গাপুরে রোটেশনের ভিত্তিতে বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। অন্যদিকে, বাস কমায় বেড়েছে অটো-টোটোর দাপট। নাজেহাল যাত্রীরা। এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।


সকালে অফিস, স্কুল-কলেজে যাওয়ার তাড়া। কিন্তু অপেক্ষাই সার। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েও বাসের দেখা নেই। ফলে গন্তব্যে পৌঁছতে দেরি হচ্ছে। সময় বাঁচাতে অটো-টোটোই এখন ভরসা। আর এই সুযোগে ইচ্ছেমতো চড়া ভাড়া হাঁকাচ্ছেন অটো-টোটো চালকদের একাংশ। 


এই ছবি দুর্গাপুরের। যাত্রীদের অভিযোগ, জ্বালানির দামবৃদ্ধির সরাসরি প্রভাব পড়েছে পরিবহণ ব্যবস্থায়। রাস্তায় কমে গেছে বাস। দুর্গাপুরের বাসিন্দা সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে। জ্বালানির দাম বেড়েছে বলে কম বাস বের করছে।


মিলন কুণ্ডু নামে অপর একজন বলেন, অটো টোটো অনেক বেশি ভাড়া চাইছে। তাই বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছি।


দুর্গাপুরে লিটারপ্রতি পেট্রোলের দাম ১১৪ টাকা ৯৫ পয়সা। ডিজেলের দাম লিটারে ৯৯ টাকা ৬৮ পয়সা। এই পরিস্থিতিতে রোটেশনের ভিত্তিতে রাস্তায় বাস নামাচ্ছেন মালিকরা। দুর্গাপুর বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কাজল দে বলেন, ২৭০-২৮০টা বাস ছিল। কোভিডের কারণে অনেকে বাস বিক্রি করে দিয়েছে। বসে থাকায় বাস খারাপ হয়ে গেছে। সারানোর সামর্থ্য নেই। তাই কম চলছে। কতদিন চালাতে পারব জানি না।


এনিয়ে একযোগে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ বাম-বিজেপির। দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্ণণ ঘোড়ুই বলেন, বাস শিল্প বাঁচাতে রাজ্য সরকারের এগিয়ে আসা উচিত। অটো-টোটো গলিতে ঢুকে যাচ্ছে বলে যাত্রীরা প্রেফার করছে। জ্বালানির দাম কমাতে রাজ্য সরকার ভ্যাট কমাক।


সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, বাস কম চলায় বহু শ্রমিক বেকার হয়ে যাচ্ছে। সঠিক পরিকল্পনার অভাব। টাউন সার্ভিসে সরকারি বাস চললেও মানুষের সুরাহা হত।


এদিকে দুর্গাপুর পুরসভার চেয়ারম্যান ও তৃণমূল নেতা মৃগেন পাল বলেন, কেন্দ্রের শুল্ক চাপানোর ফলে পরিবহণ ব্যবস্থা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির দিকে চলে যাচ্ছে। আমরা আমাদের মতো করে চেষ্টা করছি।


একদিকে, জ্বালানির দামবৃদ্ধির ফলে রাস্তায় বাস কমে যাওয়ার সমস্যা, আরেকদিকে অটো-টোটোর দৌরাত্ম্য। দুয়ের টানাপোড়েনে জেরবার দুর্গাপুরের বাসিন্দারা।