মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর : দুর্গাপুর পুরসভার মেয়াদ ফুরনোর মুখে শিল্পশহরে বেহাল রাস্তা সংস্কারের সিদ্ধান্ত আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের। তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক তরজা। বিরোধীদের অভিযোগ, দুর্গাপুর পুরভোটের দিকে তাকিয়েই এখন রাস্তা সারাইয়ের সিদ্ধান্ত। মানতে নারাজ উন্নয়ন পর্ষদ।


তৃণমূল পরিচালিত দুর্গাপুর পুরসভার কার্যকালের মেয়াদ অগাস্ট মাসে শেষ হচ্ছে। তারপর সেখানে পুরভোট হওয়ার কথা। ঠিক তার আগেই, ইস্পাতনগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে, সগরভাঙা কলোনি এলাকায় বেহাল বনফুল সরণি সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিল আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা এডিডিএ। এডিডিএ সূত্রে খবর, রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রায় ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে তারা। 


এডিডিএ-র চেয়ারম্যান ও তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, অনেক দিন ধরে এই রাস্তা সংস্কারের দাবি। সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা বিবেচনা করে আমরাই সারাইয়ের সিদ্ধান্ত নিলাম। ৫ কোটি ব্যয়ে রাস্তা মেরামত হবে।


পুরসভার মেয়াদ ফুরনোর ঠিক মুখে, রাস্তা সংস্কারের প্রশাসনিক তৎপরতাকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘড়ুই বলেন, পুরোটাই গিমিক। সামনে দুর্গাপুর নগর নিগমের নির্বাচন। এখন নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে জোড়াতাপ্পি দিয়ে কাজ করে মানুষের মন জয়ের চেষ্টা। টেন্ডারের সঙ্গে কাজের মানের বিজেপি কাজ বন্ধ করে দেবে।


পশ্চিম বর্ধমান সিপিএম জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, বাম পুরবোর্ডের আমলে শহরের বুকে যে রাস্তাগুলি ছিল আজ তা রক্ষণাবেক্ষণ করতে গিয়ে জিভ বেরিয়ে যাচ্ছে তৃণমূলের। ব্যর্থ পুরবোর্ড দুর্গাপুর শহর চালাচ্ছে।


শিল্প শহরের একাধিক কারখানায় যাওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা হলেও, দীর্ঘদিন ধরেই শোচনীয় অবস্থা বনফুল সরণির। রাস্তার মধ্যে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। রাস্তার গর্তে জল জমে, কোথাও কোথাও মৃত্যুফাঁদের চেহারা নিয়েছে। বেহাল রাস্তা সংস্কারের দায় কার ? দুর্গাপুর পুরসভার নাকি আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের ? তা নিয়ে দীর্ঘ টানাপোড়েন চলছিল দু’ পক্ষের মধ্যে। উন্নয়ন পর্ষদের অভিযোগ ছিল, প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তায় গাড়ি পিছু টোল বাবদ টাকা আদায় করছে পুরসভা। অথচ রাস্তা সংস্কারের দায় নিচ্ছে না তারা।  শেষ পর্যন্ত সেই উন্নয়ন পর্ষদই রাস্তা সংস্কারে এগিয়ে এল।