মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর : DPL-র একটি ইউনিট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুর্গাপুরে (Durgapur) বিদ্যুত্‍ পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা । এই ঘটনায় রাজ্য সরকারের পরিকল্পনার অভাবকেই দায়ী করেছে বিরোধীরা। যদিও দ্রুত সমস্যা মিটে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছে DPL কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে উদ্যোগী হয়েছেন দুর্গাপুর পূর্বের তৃণমূল বিধায়কও।


মঙ্গলবার থেকে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে DPL-এর ৭ নম্বর ইউনিটের। পরিস্থিতি সামলাতে এখন একমাত্র ভরসা ৮ নম্বর ইউনিট। কেন এই সমস্যা ? তা নিয়েই তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। শাসক থেকে বিরোধী, প্রত্যেকেরই দাবি, সঙ্কটের অন্যতম কারণ কয়লার পর্যাপ্ত জোগানের অভাব। যদিও DPL কর্তৃপক্ষের পাল্টা দাবি, প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে বন্ধ ৭ নম্বর ইউনিট।


রাজ্য সরকারের অধীনস্থ সংস্থা দুর্গাপুর প্রজেক্ট লিমিটেড বা DPL-এ ৭ ও ৮ নম্বর ইউনিট থেকে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। DPL সূত্রে খবর, ৭ নম্বর ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৩০০ মেগাওয়াট। মঙ্গলবার থেকে এই ইউনিট বন্ধ থাকায়, ২৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৮ নম্বর ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে। তা দিয়ে দুর্গাপুর শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। অন্যান্য জায়গা থেকেও বিদ্যুৎ নিয়ে পরিস্থিতি সামলানো হচ্ছে বলে DPL সূত্রে খবর।


তবে এই অচলাবস্থার জন্য কয়লার পর্যাপ্ত জোগানের অভাব ও সরকারের পরিকল্পনার অভাবকে দায়ী করছে বিরোধীরা। দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, পরিকল্পনার অভাবে সরকারি সংস্থার এই অবস্থা।


এনিয়ে পশ্চিম বর্ধমানের সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, সঠিক পরিকল্পনার অভাব, প্রয়োজন অনুযায়ী কয়লার জোগান নেই। বড়জোড়া ট্রান্স দামোদর কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলন সম্ভব হচ্ছে না, তাই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে।


কয়লার সমস্যার কথা মেনে নিয়েও, বিরোধীদের খোঁচা দিয়েছে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন INTTUC। আইএনটিটিইউসি-র ডিপিএল ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল দাস বলেন, বিরোধীদের এনিয়ে মাথাব্যথার কারণ নেই। কয়লার একটা সাময়িক সমস্যা হয়েছিল। দু-একদিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে।


এই পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করেছেন দুর্গাপুর পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক প্রদীপ মজুমদার। তিনি জানিয়েছেন, DPL আধিকারিকদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। কয়লার জোগানের একটা সমস্যা হয়েছিল। আশা করা হচ্ছে, রবিবারের পর সমস্যা মিটে গিয়ে ফের উৎপাদন শুরু হবে ৭ নম্বর ইউনিটে।


এদিকে ডিপিএলের জনসংযোগ আধিকারিক স্বাগতা মিত্র বলেন, পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু হয়নি, খুব তাড়াতাড়ি সমস্যা মিটে যাবে, কোনও টেকনিকাল প্রবলেম হতে পারে।


কবে ফের ৭ নম্বর ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে তারই অপেক্ষায় দুর্গাপুরবাসী।