সোমনাথ দাস, পশ্চিম মেদিনীপুর: পৌরসভার 'হাউস ফর অল'-এর (House for All) আওতায় বাড়ি দেওয়ায় বেনিয়মের অভিযোগ তুলে ওয়ার্ড সভাপতিকে ঘিরে বিক্ষোভ Chandrakona News)। বচসা থেকে লেগে গেল হাতাহাতিও। ওয়ার্ড সভাপতিকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল। এমনকি চন্দ্রকোনা পৌরসভায় গিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ওয়ার্ডের মহিলারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসতে হয় পুলিশকে (Paschim Medinipur News)।
বাড়ি দেওয়ায় বেনিয়মের অভিযোগ তুলে ওয়ার্ড সভাপতিকে ঘিরে বিক্ষোভ
স্থানীয়দের অভিযোগ, টাকা দিলেই মিলছে বাড়ি। যাঁদের টাকা আছে তাঁরা বাড়ি পাচ্ছেন, যাঁদের টাকা নেই তাঁরা পাচ্ছেন না। এই অভিযোগেই সোমবার চন্দ্রকোনা পৌরসভায় তুমুল বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ল। বিক্ষোভে শামিল হলন বাড়ি না পাওয়া পৌরসভা এলাকার মহিলারাও, যাকে ঘিরে শুরু হয়েছে তুমুল রাজনৈতিক তরজা ।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা পৌরসভা এলাকার ঘটনা। সোমবার চন্দ্রকোনা পৌরসভার অন্তর্গত ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শতাধিক মহিলা এসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এমনকি পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রতিমা পাত্রের অফিসে ঢুকেও চলে তুমুল চিৎকার চেঁচামেচি। বিক্ষোভকারীদের দাবি, যাঁদের সত্যিই বাড়ি প্রয়োজন, তাঁরা বাড়ি পাননি। বরং যাঁদের প্রচুর টাকা, টাকা দিতে পারছেন, তাঁরাই বাড়ি পেয়ে যাচ্ছেন।
পৌরসভায় বিক্ষোভ দেখানোর পর ওয়ার্ডে ফিরে সন্ধেয় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে হাতাহাতি লেগে যায়। এ বিষয়ে ওয়ার্ড তৃণমূলের সভাপতি অশোক মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, গালিগালাজ থেকে শুরু করে কলার ধরে তাঁকে টেনে নিয়ে গিয়ে হেনস্থা করা হয়। তৃণমূলেরই বেশ কয়েক জন এই ঘটনা ঘটান বলে দাবি তাঁর।
যদিও ওই ওয়ার্ডের বেশ কিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের দাবি, পুরো দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ওয়ার্ডের সভাপতি অশোক। তাঁর নেতৃত্বেই কিছু মহিলাদের ভুল বুঝিয়ে পৌরসভায় গন্ডগোল বাধানো হয়। ওয়ার্ডে তৃণমুলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, শেষ পর্যন্ত আসতে হয় চন্দ্রকোনা থানার পুলিশকে। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
আরও পড়ুন: Ganga Ghat: গঙ্গার ঘাটের অবস্থা দেখে ক্ষোভপ্রকাশ মমতার, মেরামতি করতে তড়িঘড়ি তৎপর পুরসভা!
এই ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে তুমুল রাজনৈতিক তরজা। বিজেপি-র ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক সুদীপ কুশারির দাবি, তৃণমূলের নেতারা টাকার বিনিময়ে বাড়ি দিয়েছেন অনেককে। এমনকি যে সমস্ত ব্যক্তির বাড়ির প্রয়োজন নেই, তাঁরাও বাড়ি পেয়েছেন। এই নিয়ে তারা লিখিত অভিযোগও জানিয়েছিলেন বলে দাবি সুদীপেরর।
যদিও এ নিয়ে বিজেপি-কে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি চন্দ্রকোনা শহরের তৃণমূলের সভাপতি প্রদীপ সাঁতরা। তাঁর দাবি, বিজেপি নিজের চরকায় তেল দিক। ছোটখাটো কিছু সমস্যা। সেগুলি ওয়ার্ডে বসেই সমাধান হয়ে যাবে। সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন চন্দ্রকোনা পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রতিমা পাত্রও। তিনি বলেন, "টাকার বিনিময়ে বাড়ি ও সঠিক ব্যক্তি বাড়ি না পাওয়ার অভিযোগ পেয়েছি।" তিনি জানিয়েছেন, পাঁচ-ছয় মাস হল দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। সব সমস্যা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে।
প্রকাশ্যে শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দল!
তবে দরিদ্র মানুষের সরকারি বাড়ি পাওয়াকে ঘিরে পৌরসভায় বিক্ষোভ উত্তেজনা, আর তাকে কেন্দ্র করে ওয়ার্ডে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বচসা-হাতাহাতির ঘটনায় প্রকাশ্যে শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দল।