সৌমেন চক্রবর্তী, মেদিনীপুর : পুজো একটাই। কিন্তু, সেখানেই পরপর দু’বার হল খুঁটিপুজো। ঘটনায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে মেদিনীপুরের (Medinipur) অরবিন্দনগর সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির (Durgotsav Committee) পুজো। দু’পক্ষেরই দাবি, তারাই আসল কমিটি। ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। 


আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে মেদিনীপুরের অরবিন্দনগর সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি-


ঢাকে কাঠি পড়তে এখনও মাসদুয়েকের বেশি সময় বাকি। তবে কলকাতা থেকে জেলা...শুরু হয়ে গেছে খুঁটি পুজোর হিড়িক। এরইমধ্যে আজব কাণ্ড ঘটল পশ্চিম মেদিনীপুরে। এক মাঠে, একটাই পুজো হয়। কিন্তু, সেখানে পরপর দু’দিনে দু’বার হল খুঁটিপুজো। যে ঘটনায় এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে মেদিনীপুরের অরবিন্দনগর সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির পুজো।


আরও পড়ুন ; শ্রাবণের প্রথম সোমবারে শিবের পুজোর সন্ধিক্ষণ উপস্থিত, জেনে নিন সেই শুভক্ষণ


বৃহস্পতিবার, প্রথম খুঁটিপুজো করেন কমিটির কয়েকজন সদস্য। শুক্রবার ফের, খুঁটিপুজো করেন কমিটির অন্য সদস্যরা। যাঁরা আবার স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলরের অনুগামী হিসেবে পরিচিত। যদিও, অনুষ্ঠানের সময় উপস্থিত ছিলেন না কাউন্সিলর মৌসুমী হাজরা। যদিও একই কমিটির দু’পক্ষেরই দাবি, তারাই আসল কমিটি।


অরবিন্দনগর সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মণীষা নাগ বলেন, এ বছর যে সাধারণ সভা হয় সেটি ভন্ডুল হয়ে যায় এবং সেই সবার মধ্যে কোনও কিছুই সিদ্ধান্ত এসে উপনীত হওয়া যায়নি যে এ বছর কোন কমিটি পুজো করবে, না করবে। বৃহস্পতিবার আমরা একটি খুঁটি পুজার করি। পরবর্তী ক্ষেত্রে শুক্রবার ২২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের নেতৃত্বে একটি দল খুঁটিপুজোর আয়োজন করে। 


অন্য কমিটির দাবি, সর্বসম্মতিক্রমে তৃণমূল কাউন্সিলরকে পুজো কমিটির সভানেত্রী করা হয়েছে। অরবিন্দনগর সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির কার্যকরী সভাপতি কল্যাণ মহাপাত্র বলেন, গণতান্ত্রিকভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের মতামত অনুযায়ী আমরা রেজোলিউশেন করে কমিটি তৈরি করেছি। আমাদের সভাপতি প্যানেলে মৌসুমী হাজরা, যিনি আমাদের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তাঁকে আমরা শহরের মধ্যে সর্বাধিক ভোটে নির্বাচিত করেছি। ওঁর নাম সভাপতি হিসেবে প্রস্তাব করার পরে সবাই সমর্থন করেছে।


এবিষয়ে, তৃণমূল কাউন্সিলর মৌসুমী হাজরা জানিয়েছেন, তিনি মিটিংয়ে ছিলেন না। তাঁর অনুগামীদের কেউ খুঁটিপুজোতে যায়নি। এই বিভাজনের বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি। 


এদিকে, ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ সভাপতি শঙ্কর গুছাইত বলেন, এই ঘটনা নতুন কিছু নয়। তৃণমূলের কাউন্সিলর, জেলা সভাপতিরা এই কাজটাই সারাজীবন করে আসে। সারা জীবন আমরা দেখেছি সব জায়গায় রাজনীতি করে তৃণমূল। এখন পুজোকে কেন্দ্র করে করছে অরবিন্দ নগরে। দুই জায়গায় খুঁটিপুজো দুদিনে। এটা তৃণমূলের কাছে অস্বাভাবিক কিছু নয়।


এনিয়ে মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুজয় হাজরার বক্তব্য, কমিটি রিজোলিউশন করে কাউন্সিলরকে সভাপতি মনোনীত করেছে। তারা কেন অভিযোগ করেছে, আমারও জানা নেই, কাউন্সিলরেরও জানা নেই। তবে কোথাও একটা হতাশা আর পিছন থেকে কিছু বিজেপির লোক অরবিন্দনগরের পুজোকে নিয়ে এর আগেও অনেক ধরনের সমস্যা তৈরি করেছে, তারাই হয়তো রটাচ্ছে।


একই মাঠ, একই পুজো। কিন্তু পরপর দু'দিন দুবার খুঁটি পুজো হল এই সার্বজনীন দুর্গোৎসব পুজো কমিটির। এখন দেখার, কীভাবে এই পুজোর জট কাটে।