সৌমেন চক্রবর্তী, মেদিনীপুর : চার দশক পরে ভোট হতে চলেছে মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনে (Medinipur District Sports Association)। ২০ আসনের সেই ভোটে মনোনয়ন দিয়েছেন এক ঝাঁক তৃণমূল নেতা (TMC Leaders)। এত মনোনয়নের নেপথ্যে তৃণমূল বিধায়ক জুন মালিয়া ও জেলা সভাপতির মধ্যে টানাপোড়েন, কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। দলগত কোনও বিষয় নেই বলে পাল্টা দাবি করেছে তৃণমূল। 


ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডই হোক বা রাজ্যস্তরের ক্রীড়া সংস্থা, বোর্ড গঠনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে বারবার ! এবার কার্যত তারই ছায়া পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার পরিচালন সমিতির নির্বাচনেও !


২০ আসনে মনোনয়ন ৫০-


চার দশক পরে ভোট হতে চলেছে মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনে। ২০টি আসনে মনোনয়ন জমা পড়েছে ৫০টি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্তরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তার মধ্যে তৃণমূলেরই প্রথম সারির ১০ নেতা-সহ প্রায় ৪২ জন আছেন। তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় হাজরা, সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান দীনেন রায়, জেলার যুব সভাপতি সন্দীপ সিংহ, তৃণমূলের ২ রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোৎ ঘোষ ও আশিস চক্রবর্তী থেকে মেদিনীপুর পুরসভার কাউন্সিলর...কে নেই তালিকায় ! সুজয় হাজরা বলেন, গত দু’বার আমি এক্সিকিউটিভ বডির মেম্বার এবং ডিএসএ'র লাইফ মেম্বার হিসেবে ফর্ম তুললাম। এখানে পার্টিগত কোনও বিষয় নয়।


যদিও বিরোধীদের কটাক্ষ, জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচনে এত মনোনয়নের নেপথ্যে আছে মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়া ও জেলা সভাপতি সুজয় হাজরার মধ্যে টানাপোড়েন। মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক গৌরীশঙ্কর অধিকারী বলেন, মেদিনীপুরের ডিএসএ'র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের রাজনৈতিক দৈন্যদশা এবং গোষ্ঠীকোন্দল আবার প্রকট হয়ে উঠল। স্থানীয় বিধায়ক জুন মালিয়া এবং জেলা সভাপতি সুজয় হাজরার চরম গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।


অন্যদিকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সিপিএমের সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ বলেন, খেলাধুলা জগতের সাথে যাদের কোনও সম্পর্ক নেই। হয়তো এখানে কোনও বখরা আছে, সেই বখরা যাতে কুক্ষিগত করা যায়, সেজন্যই এই লড়াই।


তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, DSA’র মেম্বার না হলেও সিএবি’র বার্ষিক সভাতে এবার প্রতিনিধিত্ব করেছেন মেদিনীপুরের তৃণমূল বিধায়ক জুন মালিয়া। বিভিন্ন ক্রীড়া সংস্থায় অনুষ্ঠানেও তাঁকে দেখা গেছে। যদিও বিধায়কের দাবি, জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচনে তাঁর কোনও ভূমিকাই নেই। মেদিনীপুরের তৃণমূল বিধায়ক জুন মালিয়া বলছেন, যারা আসুক, আমি চাই তারা খেলার মাঠে যেন থাকতে পারে। ভোটাভুটি যদি হয় তো হবে। জুন মালিয়ার কোনও প্রভাব থাকবে না।


যদিও তলে তলে এই নির্বাচন ঘিরেও তৈরি হয়েছে সংঘাতের আবহ! পশ্চিম মেদিনীপুর তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, আমার কাছে এসেছিল ২ পক্ষই। আমি কাল বা পরশু ডাকব। তারপর ঠিক করে নেব কে কে থাকবে, কে উইথড্র করবে।


বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন। সেদিনই জানা যাবে, কারা জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ২০ তারিখ ডিএসএ’র নির্বাচন।


আরও পড়ুন ; অখিলের বিতর্কিত মন্তব্য জের, রাজ্যপালকে চিঠি শুভেন্দুর