আশাবুল হোসেন, প্রকাশ সিনহা ও অর্ণব মুখোপাধ্যায়, খড়গপুর : পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Vote) গা জোয়ারি নয়। বাড়াতে হবে জনসংযোগ। দ্রুত শেষ করতে হবে বকেয়া কাজ। সূত্রের খবর, খড়গপুরের (Kharagpur) দলীয় বৈঠকে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে এমনই বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগও তোলেন তৃণমূল নেত্রী।


মঙ্গলবার বিজেপির নবান্ন অভিযান ঘিরে যখন উত্তাল গঙ্গার এপার-ওপার, তখন খড়গপুরে দলীয় বৈঠকে পঞ্চায়েতের প্রস্তুতি নিয়ে বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুই মেদিনীপুরের মন্ত্রী-বিধায়ক, জেলা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি।


কী বলেন মমতা ?


সূত্রের খবর, সেখানে তৃণমূল নেত্রী বলেন, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে গা জোয়ারি করা যাবে না। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে হবে। রাজ্য সরকারের সমস্ত প্রকল্পের সুবিধা যাতে সাধারণ মানুষ পায়, তা সুনিশ্চিত করতে হবে। তৃণমূল নেত্রী নির্দেশ দেন, যাঁরা এখনও সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাননি, দ্রুত তাঁদের কাছে সেই সুবিধা পৌঁছে দিতে হবে। একইসঙ্গে পঞ্চায়েতের বকেয়া কাজও দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেন তিনি। 


আরও পড়ুন ; জুন-শ্রীকান্ত হ্যান্ডশেক, মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মিটল বিবাদ


মঙ্গলবারের বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে সরব হন তৃণমূল নেত্রী। সূত্রের খবর, বৈঠকে তিনি অভিযোগ করেন, বাংলা আবাস যোজনা ও বাংলা সড়ক যোজনার টাকা কেন্দ্রীয় সরকার দিচ্ছে না। তাই বলে সেই কাজ আটকে থাকবে না। কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার কথা মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। 


প্রত্যেক বিধায়ককে বিধানসভা কেন্দ্রের উন্নয়নের জন্য প্রতি বছর ৬০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। সেই টাকার একাংশ এবং পঞ্চদশ অর্থ কমিশন যে টাকা জেলা পরিষদকে দেয়, তার একটা অংশ সেই দুই প্রকল্পে ব্যবহার করার নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 


পাল্টা নবান্ন অভিযানের দিন মুখ্যমন্ত্রীর পশ্চিম মেদিনীপুরের বৈঠক নিয়ে কটাক্ষ ছুঁড়ে দেয় বিজেপি। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, গণতন্ত্রকে এখানে মার্ডার করা হল। মুখ্যমন্ত্রী ভয় পেয়েছেন। পালিয়ে গেছেন। তিনি বিজেপির এই সংখ্যা দেখে বুঝতে পেরেছিলেন, কত মানুষ এখানে আসবেন এবং যে মানুষ এসেছে আপনারা দেখেছেন, এটা হচ্ছে থার্টি পার্সেন্ট অফ দ্য টোটাল। 


বৈঠকে এদিন নন্দীগ্রাম নিয়েও আলোচনা হয়। তৃণমূল সূত্রে খবর, মমতা বলেন, নন্দীগ্রামের মানুষকে ওরা ভুল বুঝিয়েছিল। তাই নন্দীগ্রামের মানুষকে বোঝাতে হবে যে, রাজ্য সরকার তাঁদের পাশে আছে। এদের সমর্থন আদায় করে ভবিষ্যতে ভোটে ভাল ফল করতে হবে।


যদিও লালবাজার থেকে বেরোনোর পর এপ্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, নন্দীগ্রামে আমার কাছে হেরেছিল, তারপর থেকে আমায় মিথ্যা মামলায় প্রতি সপ্তাহে ফাঁসানোর চেষ্টা করে।


সম্প্রতি জেলায় সাংগঠনিক রদবদলে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান। সূত্রের খবর, এই বৈঠকেও ফের সেই বিষয়টি তোলেন তিনি। সূত্রের খবর, সুফিয়ানের সমালোচনা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ২১’এর বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর কী ভূমিকা ছিল, তা তিনি জানেন।