অমিতাভ রথ ও সৌমেন চক্রবর্তী, মেদিনীপুর : শিলদা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র চত্বরে থাকা ইএফআর ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় দোষীসাব্যস্ত ২৩ জন মাওবাদী। বুধ ও বৃহস্পতিবার দুই ধাপে দোষীদের সাজা ঘোষণা করা হবে।
কী ঘটেছিল ?
২০১০ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি শিলদা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র চত্বরে থাকা EFR ক্যাম্পে মাওবাদীরা হামলা চালায়। গুলি করে, ক্যাম্পে আগুন লাগিয়ে ২৪ জন EFR জওয়ানকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। জওয়ানদের পাল্টা প্রতিরোধে ৫ জন মাওবাদী মারা গিয়েছিল। এই ঘটনার পরই EFR ক্যাম্প তুলে দেওয়া হয়েছিল। সেই EFR ক্যাম্পের অদূরে শিলদায় করা হয় রাজ্য পুলিশের স্ট্রাকো ক্যাম্প।
জঙ্গলমহলে মাওবাদী হামলায় এত নৃশংস হত্যালীলা আগে কখনো হয়নি। বিকেল ৫টা নাগাদ এই ক্যাম্পে হামলা চালায় সশস্ত্র মাওবাদীরা। একের পর এক জওয়ানকে নৃসংশভাবে গুলি করে লাগিয়ে দেওয়া হয় আগুন। এই ঘটনায় গুরুতর আহত হন দুই জওয়ান। উদ্ধার হন মোট ৫ জন। লুঠ হয় পুলিশের অস্ত্রশস্ত্র। এর পরেই শুরু হয় পুলিশের তদন্ত।
এই মামলায় মোট ২৪ জন মাওবাদীর নামে অভিযোগ দায়ের হয়। যার মধ্যে সুদীপ চংদার (কাঞ্চন) এর মৃত্যু হয়েছে। এই মামলায় প্রথমে মাও নেতা রঞ্জন মুণ্ডা গ্রেফতার হন। তার পরে একের পর এক মাও নেতা-নেত্রী গ্রেফতার হন। অধরা ছিলেন মাও নেত্রী সুচিত্রা মাহাত। পরে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন সুচিত্রা। প্রথমে এই মামলা শুরু হয় ঝাড়গ্রাম আদালতে। পরর্বতীকালে সেই মামলার শুনানি শুরু হয় পশ্চিম মেদিনীপুর আদালতে।
মঙ্গলবার জেলবন্দি ১৪ জন মাওবাদীকে তোলা হয় আদালতের ষষ্ঠ অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক সালিম সাহির এজলাসে। এছাড়াও বাকি যাঁরা জামিনে মুক্ত রয়েছেন, তাঁদেরও মঙ্গলবার আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার এই মামলার অভিযুক্ত ২৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। এখন কী তাঁদের সাজা হয় সেদিকেই তাকিয়ে সব মহল।
প্রসঙ্গত, এক সময় একের পর এক মাওবাদী হামলায় নিত্যদিন উত্তপ্ত থাকত এ রাজ্যের জঙ্গলমহল। অশান্তির জেরে জেরবার হয়ে ওঠে জঙ্গলমহল এলাকার সাধারণ মানুষের জীবন। সেই আতঙ্কের পরিবেশ এখন অনেকটাই কেটেছে। এনিয়ে রাজনৈতিক চর্চাও এখন অনেক কম।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে