বিশ্বজিৎ দাস, পশ্চিম মেদিনীপুর: তীব্র গরমে কার্যত প্রাণ ওষ্ঠাগত জেলার বাসিন্দাদের। তার মধ্যেই সমস্যা বাড়াচ্ছে জল নিয়ে। গরম পড়তেই পানীয় জলের অভাব আরও বাড়ছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। ঘটনাস্থল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর ১ নম্বর ব্লকের গোপালী গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শোলাডহর। এই এলাকায় প্রায় বছর দুয়েক ধরে পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে বলে অভিযোগ। পানীয় জলের সমস্যার কারণেই তীব্র গরমে এলাকার বাসিন্দারা প্রায় এক-দেড় কিলোমিটার দূর থেকে পানীয় জল বয়ে নিয়ে আসছে। বহুবার স্থানীয় প্রশাসনকে জানানোর পরেও কোনও হেলদোল বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। শতাধিক পরিবার থাকে এই শোলাডহর এলাকায়। বেশিরভাগ লোকের বাড়িতেই পানীয় জলের কল লাগানো রয়েছে। কিন্তু সেই কলে আসে না জল এমনটাই অভিযোগ গ্রামবাসীদের।
কল আছে, জল নেই:
এলাকাবাসী সীমা পট্টনায়েক বলেন, 'আমাদের এখানে জলের সমস্যা রয়েছে। এই তীব্র গরমে দেড় কিলোমিটার দূর থেকে জল বয়ে নিয়ে আসতে হয়। যে পাড়ায় আমরা জল নিতে যাই, তাঁরা আমাদের বলে তোমাদের কল আছে তোমাদের জল দেব না। জল নিতে গেলে লোকের কথা শুনতে হয়। এই গ্রামের ৮০-৯০ টা বাড়ি আছে তারা কেউ জল পায় না। সবাইকে সকাল বিকাল তিন বেলা জল নিয়ে আসতে হয় রান্না-খাওয়ার জন্য। আমরা এলাকার পঞ্চায়েতকে জানিয়েছি। দিদি বলেছিলেন আমরা উপরে অভিযোগ জানাচ্ছি জলের সমস্যার সমাধান করবে। কিন্তু দেড় বছর হয়ে গেল এই জলের সমস্যার সমাধান আমরা কিছুই পাইনি। তীব্র গরমে সবাইকে জল নিয়ে আসতে হয়। অন্য পাড়াতে টাইম কলে জল ছাড়ে, আমরা সময় মতন না যেতে পারলে সেই জলটাও পায় না। তার জন্য আবার আমাদের অপেক্ষা করতে হয় বিকেলে কখন জল আসবে।' এলাকাবাসী শিপ্রা রায় বলেন, 'এলাকায় জল নেই দীর্ঘদিন। প্রত্যেকের বাড়িতে কল আছে কিন্তু জল পরছে না। সেই কারণে আমাদের এক, দেড় কিলোমিটার দূর থেকে জল নিয়ে আসতে হয়। ওখানের লোক আমাদের বলে তোমাদের ওখানে জল আছে। কিন্তু কেন তোমরা আমাদের এখানে জল নিতে আসো। আমাদের বয়স হয়েছে, হাতে করে বালতিতে জল নিয়ে আসতে প্রচুর কষ্ট হয়।'
স্থানীয় শোলাডহর এলাকার পঞ্চায়েত লতিকা মল্লিক জলের সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, 'সমস্যা শুধু ওদের নয়, আমারও জলের সমস্যা আছে। প্রতিদিন কেউ না কেউ আমাকে অভিযোগ জানান। এত গরমের মধ্যে জল পাচ্ছি না, আমাকেও মিউনিসিপালিটি এলাকায় গিয়ে মাথায় করে জল আনতে হয়। PHE ডিপার্টমেন্ট থেকে জলের লাইন করে দিয়েছে। কিন্তু সেই জলের সমস্যা আবার হচ্ছে। ১৫০-২০০ পরিবার আছে। প্রত্যেকের বাড়িতেই কল হয়ে গেছে, কিন্তু তাতে জল নেই। PHE অফিস যাওয়ার পরেও আমাদের কোনও কাজ হচ্ছে না। কেন ওরা করে দিচ্ছে না আমরা নিজেই বুঝতে পারছি না। প্রায় দুই বছর ধরে চলছে এই জলের সমস্যা।'
PHE ডিপার্টমেন্টের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বিকাশ দাস বলেন, 'আমি এখানে নতুন এসেছি। আজ সকালে অভিযোগ পেয়েছি। খুব তাড়াতাড়ি সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করব।'
আরও পড়ুন: অয়নের সঙ্গে বহু প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা দেখা করতে আসতেন, 'বিস্ফোরক' শ্বেতা, দাবি ইডি সূত্রে