মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: বিল্ডিং প্ল্যানের (Building Plan) অনুমোদন নিয়ে দুর্গাপুর পুরসভায় (Durgapur Municipality) চালু হল 'সিঙ্গল উইন্ডো সিস্টেম' (Single Window System)। বিরোধীদের প্রশ্ন, পুরসভার মেয়াদ শেষের পর কেন এই পদ্ধতি চালু করা হল? এতদিন কেন চালু করা হয়নি? তবে যদিও তাতে গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসকদল (Ruling Party)। ৬ সেপ্টেম্বর তৃণমূল (TMC) পরিচালিত দুর্গাপুর পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। বর্তমানে সেখানে দায়িত্বে রয়েছে ৫ সদস্যের প্রশাসকমণ্ডলী। 


অনলাইন পরিষেবা-তরজা


বিল্ডিং প্ল্যানের অনুমোদন পেতে অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষার দিন শেষ হল। দুর্গাপুর পুরসভায় চালু করা হল সিঙ্গল উইন্ডো সিস্টেম। এবার থেকে অনলাইনেই মিলবে বাড়ি বা কোনও বাণিজ্যিক নির্মাণের প্রয়োজনীয় অনুমোদন।


দুর্গাপুর পুর এলাকায় চলতি সপ্তাহে চালু হয়েছে এই পরিষেবা। পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিল্ডিং প্ল্যানের অনুমোদন পেতে অনলাইনে আবেদন করে আপলোড করতে হবে প্রয়োজনীয় নথি। সেই সমস্ত নথি ঠিক থাকলে ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই মিলবে অনুমোদন। 


দুর্গাপুর পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, 'স্বচ্ছতা বজায় রেখে মোটামুটি ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে আমরা সকলের প্ল্যান অ্যাপ্রুভ করে দিতে পারব। কিন্তু তখনই এটা সম্ভব হবে যখন যে প্ল্যান দেওয়া হয়েছে সেটা সব দিক দিয়ে ঠিকাঠাক হবে। অর্থাৎ অনলাইনে অস্বচ্ছতা অবলম্বন করে কোনওভাবেই কোনও প্ল্যান পাস করানো যাবে না। এছাড়া কোন জায়গায় পদ্ধতি আটকে, সেটা অনলাইনে দেখতেও পাবেন। আগে পুরসভার ছাড়পত্র পেতে যা সময় লাগত, সেটা এখন অনেক তাড়াতাড়ি স্বচ্ছতার সঙ্গে হবে।' দুর্গাপুরের বাসিন্দারাও অনলাইন সিস্টেম চালু হওয়ায় বেশ খুশি।


গোটা পরিস্থিতিতে শুরু রাজনৈতিক তরজা


কিন্তু পুরসভার এই উদ্যোগ ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। গত ৬ সেপ্টেম্বর, তৃণমূল পরিচালিত দুর্গাপুর পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপর পুরসভার বিদায়ী মেয়র, ডেপুটি মেয়র ও তিন মেয়র পারিষদকে নিয়ে ৫ সদস্যের প্রশাসকমণ্ডলী গঠন করা হয়।  


এই পরিস্থিতিতে বিজেপি প্রশ্ন তুলেছে, ৫ বছর তাদের বোর্ড ক্ষমতায় থাকার সময় এই পদ্ধতি চালু করা হল না কেন? 


দুর্গাপুরের ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী বিজেপি কাউন্সিলর চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, 'ওরা ৫ বছর ক্ষমতায় ছিল। ওদের বোর্ড ছিল। বোর্ড যখন পাঁচ বছর ধরে চলল তখন এই ধরনের নিয়ম চালু করতে পারল না। এরকম বহু উদাহরণ দেখা যাবে যেখানে আগে বিল্ডিং তৈরি হয়েছে, তারপরে সেটার অনুমোদন পাওয়া গেছে। আমার মনে হয় এই পদক্ষেপ আরও আগে নেওয়া উচিত ছিল। ৫ বছর হয়ে যাওয়ার পর এখন ভোটের আগে এসব করে, মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ভোট টানার জন্য এসব করছে।'


আরও পড়ুন: Jhargram News: পুকুর খনন, বনসৃজনের টাকা উপপ্রধানের পকেটে! ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ ঝাড়গ্রামে


এই অভিযোগে অবশ্য গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। দুর্গাপুর পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলী তৃণমূল নেতা ও ভাইস চেয়ারম্যান অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'বিরোধীরা কী বলল তাতে যায় আসে না। ওদের পায়ের তলায় মাটি নেই। তাই এসব বলছে। ওদের কথায় কিছু যায় আসে না।'


২০২১ সালের অগাস্ট মাস থেকে ধাপে ধাপে রাজ্যের অনেক পুরসভাতেই এই 'সিঙ্গল উইন্ডো সিস্টেম' চালু হয়েছে। বাদ ছিল দুর্গাপুর। এবার সেখানেও শুরু হয়ে গেল এই পরিষেবা।