পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা : পাসপোর্ট জালিয়াতিকাণ্ডে এবার ইতালি-কানেকশন। নদিয়ায় লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের হাতে গ্রেফতার আরও ১। নদিয়ার চাকদা থেকে গ্রেফতার ধীরেন ঘোষ। ২০০৭ সাল থেকে ১০ বছর ইতালিতে ছিলেন ধৃত ধীরেন ঘোষ। অনেককে ইউরোপে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন ধীরেন, ধৃত মনোজ গুপ্তকে জেরায় ধীরেনের খোঁজ, খবর সূত্রের। পাসপোর্ট জালিয়াতিকাণ্ডে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮। কয়েকদিন আগেই পাসপোর্ট জালিয়াতি কাণ্ডের কিংপিন মনোজ গুপ্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাকে জেরা করেই এই ধীরেন ঘোষের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে বলে খবর পুলিশ সূত্রে। এবার তাকেও গ্রেফতার করেছে লালবাজারের গোয়েন্দা শাখা।
পাসপোর্ট জালিয়াতিকাণ্ডের জাল যে কতদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে রয়েছে তা বোঝা দায়। তদন্ত যত এগোচ্ছে, তা আরও গভীর হচ্ছে। এর আগে বেহালার বাসিন্দা মনোজ গুপ্ত গ্রেফতার হয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার চাঁদপাড়া এলাকা থেকে। এবার আরও একজন গ্রেফতার হলেন নদিয়া থেকে। বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে রয়েছে জাল পাসপোর্ট চক্রের জাল। চাকদা থেকে ধীরেন ঘোষকে গ্রেফতার করে, তার বাড়ি থেকে বেশ কিছু নথিপত্র, কেওয়াইসি উদ্ধার করেছে পুলিশ। ইতালি থেকে ফিরে আসার পর পাসপোর্ট জাল চক্রে যুক্ত হয় ধীরেন ঘোষ। ইউরোপে যাওয়ার ভিসা পাইয়ে দেওয়ার কাজ করতেন তিনি। বাংলাদেশ থেকে কেউ ভারতে এসে তারপর বিদেশে যেতে চাইলে মিডলম্যান হিসেবে কাজ করতেন ধীরেন। শুধু ইউরোপ নয় তাঁর সঙ্গে রয়েছে বাংলাদেশের যোগও। যেহেতু ইতালিতে ধীরেন ঘোষ দীর্ঘ ১০ বছর ছিলেন তার জেরে এটা স্পষ্ট যে, জাল নথির কারবারে তাঁর কানেকশন অনেক দূর পর্যন্ত রয়েছে। সাদামাঠা চেহারার ধীরেন ঘোষকে পুলিশ ইতিমধ্যেই হেফাজতে পেয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তাঁকে।
নদিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকার অনেক জায়গাতেই নেই কাঁটাতার। সেখান দিয়ে হচ্ছে অনুপ্রবেশ। আর এই নদিয়া থেকেই গ্রেফতার হয়েছেন ধীরেন ঘোষ। তিনি অনুপ্রবেশের ঘটনার মূল মাথা ছিলেন বলে খবর সূত্রের। সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছিল যে, দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ার এবং উত্তরবঙ্গ ফ্রন্টিয়ার, যা বিএসএফ- এর আওতাধীন, সেখানে অনেক জায়গায় কাঁটাতার নেই এবং সেখান দিয়ে অনুপ্রবেশও হচ্ছে। এই অনুপ্রবেশকারীরা কোথা থেকে আসছেন, কারা আসছেন, কোথায় যাবেন, কীভাবে যাবেন- সবকিছুর সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন ধৃত ধীরেন ঘোষ। অন্য দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে মিডলম্যান হিসেবেও কাজ করতেন ধীরেন। ব্যবস্থা করে দিতেন ভিসারও। একের পর এক গ্রেফতারি চলছে। এখনও পর্যন্ত জাল পাসপোর্ট কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন ৮ জন। প্রকাশ্যে এসেছে চমকে দেওয়ার মতো একাধিক তথ্য। এই জাল নথির কারবার যে কতদূর ছড়িয়ে তা এখনও স্পষ্ট নয়।